দিরাং

বমডিলা থেকে তাওয়াং যাওয়ার পথে ৪২কিমি দূরে দিরাং এর অবস্থান যা অপরূপ সুন্দর অরুণাচল এর একটি ছোট্ট জনপদ। দিরাং এ থেকে বেড়িয়ে নেওয়া যায় ১০কিমি দূরের সাংতি ভ্যালি (Sangti Valley) ও ভেড়া প্রজনন কেন্দ্র (Sheep Breeding Farm), উষ্ণ প্রস্রবণ, ওয়ার মেমোরিয়াল  ও চুগ ভ্যালি (Chug Valley) ও মনাস্ট্রি। দিরাং আপার মনাস্ট্রিটি বেশ বড়, শান্ত, ভাবগম্ভীর পরিবেশ, লোয়ার মনাস্ট্রি বা কালচক্র গোম্ফাটি তুলনায় ছোট হলেও জমজমাট।

সাংতি নদীর ওপর খাশো ব্রিজ পেরিয়ে সাংতি উপত্যকার উন্মুক্ত সমতল, কোথাও দিগন্তজোড়া ক্ষেত। কোথাও বা ঘাসজমিতে চরে বেড়াচ্ছে পাহাড়ি ঘোড়া। উপত্যকার বুক চিরে সাংতির উচ্ছ্বলতা, এ যেন বিদেশী ছবির কোন দৃশ্য। দিরাং থেকে সাংতি যাওয়ার পথে শিপ ব্রিদিং ফার্মের চত্ত্বরটিও ভারি সুন্দর, ঠিক যেন ক্যানভাসে আঁকা ছবি। পথে পাহাড়ের বাঁকে কমলালেবু আর পাহাড়ি ফুলে ছাওয়া গ্রামের বাড়িগুলি।

সাংতি ভ্যালি অবশ্য আপনি ট্রেকিং করে যেতে পারেন। এখানকার মুখ্য আকর্ষণ হল ব্ল্যাক নেকড ক্রেন। এরা মূলত অতিথি পাখি। শীতের মৌসুমে এদের দেখা যায়। এই ভ্যালির মধ্যে দিয়ে নদী তার নিজের ছন্দে বয়ে চলেছে। এখানকার লোকেরা ভেড়া ও পাহাড়ী কৃষিকাজ করেই নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে।

দিরাং (Dirang) থেকে তাওয়াং যাওয়ার পথে পড়বে চুগ ভ্যালি, হট স্প্রিং আর ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত নয়ুকমাডং ওয়ার মেমোরিয়াল (Nyukmadong War Memorial)। দিরাং এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও এখানকার একটা ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে। ১৯৫৯ সালে ভারত সরকার দলাই লামাকে এখানেই প্রথম সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেয়। এখানেই আছে দিরাং জং। জং হলো এক ধরনের দুর্গ যার গঠনশৈলী একেবারেই স্বতন্ত্র। এটি হিমালয়ের বুকে বৌদ্ধদের অস্তিত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ একটি লম্বা ও চার দেওয়ালের মধ্যে ঘেরা একটি অংশ যার মধ্যে রয়েছে মন্দির ,প্রশাসনিক কার্যালয় এবং সন্ন্যাসীদের থাকার জায়গা।

কিভাবে যাবেন

ভালুকপং (Bhalukpong) থেকে তাওয়াং (Tawang) যাওয়ার বাস বা শেয়ার গাড়িতে দিরাং চলে আসা যায়। ভালুকপং থেকে দিরাং যেতে গাড়ীতে সময় লাগে মোটামুটি ছয় থেকে সাত ঘণ্টার মতো।

কোথায় থাকবেন

দিরাং এ সরকারি ট্যুরিস্ট লজ ও ইয়াক রির্সাচ সেন্টারে থাকা যায়। বেসরকারি হোটেলও আছে। দিরাং এর হোটেল ভাড়া মোটামুটি দেড় থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে।

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ arunachaldirangindia