পাবনা

পাকশী রিসোর্ট

পাকশী রিসোর্ট (Pakshi Resort) পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় পদ্মা নদীর পাশে অবস্থিত। ঢাকা থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার পথ। যমুনা সেতু থেকে এক ঘণ্টার রাস্তা। এ রিসোর্টে পর্যটকদের জন্য রয়েছে তিনতলা বিশিষ্ট দুটি ভবন। বিদেশি স্থাপত্য কাঠামোয় গড়ে ওঠা এ রিসোর্ট এ গেলে মনে হবে উন্নত বিশ্বের কোনো মনোমুগ্ধকর রিসোর্টে আছেন আপনি। বিশাল পাকশী রিসোর্টে পাবেন সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা। এর প্রতিটি কক্ষই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। সবকিছুতেই অত্যন্ত পরিপাটি, সাজানো-গোছানো। ভেতরের আসবাবপত্র রুচিশীল, মূল্যবান এবং আভিজাত্য। যে কোনো পাঁচতারা হোটেলের সমমানের। বিশাল ডাইনিং হল। বসার জায়গা, বুফে এবং বারবিকিউয়ের ব্যবস্থা। বৃহৎ এলাকা নিয়ে ছোট্ট একটি নিরিবিলি কুটির। কিন্তু প্রতিটিতে সকালের সূর্য আলো দিয়ে পরশ বুলিয়ে দেবে আপনার চোখেমুখে। পাবেন আধুনিকতার সব ছোঁয়া। দখিনা হাওয়া ও শিশিরভেজা রিসোর্টের নিরিবিলি মনোরম পরিবেশ আপনাকে সতেজ করবে। ডবল বেডরুম, অ্যাটাচড বাথ আর আছে ব্যালকনি। অবশ্যই সুন্দর সময় কাটবে পুরো রিসোর্টের মনোলোভা স্থানগুলোতে।

পাকশী রিসোর্ট এর ভেতরে খেলতে পারেন নিজের মতো করে। আছে লন টেনিস, বাস্কেট বল, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, বিলিয়ার্ড, ক্যারম ও দাবাসহ আরও নানা ধরনের ইনডোর গেমস। হাঁটতে পারেন ফুলবাগান বা লেকের ধারে। সাঁতার কাটতে পারেন সুইমিং পুলের স্বচ্ছ পানিতে। ইচ্ছে করলে বসতে পারেন লেকের ধারে। হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত হলে বসতে পারেন শান্ত বটের ছায়ায়। ছোট ছোট পাহাড়ে উঠতে পারেন প্রিয়জনের হাত ধরে। মন চাইলে কুঁড়েঘরে বিশ্রামও নিতে পারেন। রিসোর্টে আছে দেশি-বিদেশি প্রায় ৪ শতাধিক নানা প্রজাতির গাছ ও ফলের বাগান। উদ্যানে আছে অসংখ্য অর্কিড। আর যাই হোক, নিরাপত্তা পাবেন ষোলআনা। রিসোর্টের কাছেই পদ্মা নদী। মাত্র ১০ মিনিটের পথ। বিকেলে ঘুরতে পারেন পদ্মা নদীর ধারে। নৌকায় ভাসতেও পারেন। ইচ্ছে হলে বড়শি দিয়ে মাছও ধরতে পারেন।

অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাসেন যারা, আয়োজন করতে পারেন ক্যাম্প ফায়ারের এবং থাকতে পারেন তাঁবুতে। এখানে আছে একটি মিনি চিড়িয়াখানা। যেখানে দেখতে পাবেন চিত্রা হরিণ, বানর ও কালিম পাখি।

আরও দেখার জায়গা

পাকশীই ছিল সাড়াঘাট থেকে নদীপথে কলকাতা যাওয়ার একমাত্র পথ, সেই সুবাদে এখানে গড়ে উঠেছে রেলওয়ে বিভাগীয় শহর। ঈশ্বরদী বাণিজ্যের স্থান। এখানে রয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ রেলওয়ে জংশন, এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। দেখার মতো ঐতিহাসিক স্থান এটি। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের কোলঘেঁষে লালন সেতু। এখানে দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্ধারিত স্থান। রয়েছে ঈশ্বরদী ইপিজেড, নর্থবেঙ্গল পেপার মিল, ডাল ও আখ গবেষণা কেন্দ্র। আছে ফুরফুরা দরবার শরিফ। পাশেই পাবনা শহর মাত্র ৪৫-৫৫ মিনিটের পথ। যেখানে দেখতে পাবেন উপমহাদেশের কিংবদন্তি নায়িকা সুচিত্রা সেনের বাড়ি, কোর্ট বিল্ডিং, শ্রীশ্রী অনুকূল ঠাকুরের আশ্রম, জোড়বাংলা, মানসিক হাসপাতাল, রায়বাহাদুরের গেট, পাবনা এডওয়ার্ড কলেজসহ অনেক পুরনো কীর্তি। আপনি জেনে খুশি হবেন, তৎকালীন উপমহাদেশে কোর্ট বিল্ডিংটি পটিনায় হওয়ার কথা থাকলেও পটিনার টি অক্ষরটির মাথা কাটা না থাকায় ভুলবশত তা পাবনা হয়। পাকশী রিসোর্ট থেকে লালন শাহের মাজারে যাওয়া যায় ১ঃ১৫ ঘন্টায়। ইচ্ছে করলে এখান থেকে শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়িতে সড়ক বা নদীপথেও যেতে পারেন। ঘুরে আসতে পারেন সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটা থেকে। মুক্তিযুদ্ধকালীন দেশের প্রথম স্বাধীন রাজধানী সেই মুজিবনগরেও যেতে পারেন। যেতে পারেন বনলতা সেন খ্যাত নাটোরের রাজবাড়িসহ পুঠিয়া রাজবাড়িতেও। এসব দর্শনীয় স্থান পরিদর্শনের সব ব্যবস্থা করা হয় এ রিসোর্ট থেকেই।

খাবার ব্যবস্থা

পাকশী রিসোর্টে আছে ষড়ঋতু নামের একটি আধুনিক রেস্টুরেন্ট। এ রেস্টুরেন্টে ঘরোয়া পরিবেশে পরিবেশন করা হয় নদীর টাটকা মাছ। রিসোর্টের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশি, ইন্ডিয়ান, চায়নিজ, থাই কিংবা অন্যান্য বিদেশি খাবারের সুব্যবস্থা রয়েছে। পাবেন দেশি-বিদেশি ফলের নানা ধরনের জুস, বেকারি ও প্যাস্ট্রি শপ।

যাওয়ার উপায়

ঢাকা থেকে মহাখালী-কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে করে যেতে হবে পাবনার ঈশ্বরদীর পাকশীতে। পাকশী থেকে পাকশী রিসোর্ট মাত্র ২০-২৫ মিনিটের পথ।

ট্রেনেও যেতে পারেন আপনি। ঢাকা থেকে ট্রেনে যেতে হলে কমলাপুর বা বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে উত্তরবঙ্গ বা দক্ষিণবঙ্গের যে কোনো ট্রেনে উঠে ঈশ্বরদী বাইপাস বা জংশনে নেমে পাকশী যেতে পারেন। সেখানে রিকশা বা গাড়ি নিয়ে যেতে পারেন। মাত্র ১০ মিনিটের পথ।

যোগাযোগ এর ঠিকানা

ঢাকা অফিসঃ বাড়ি-৯৯/এ, রাস্তা-০৬, পুরাতন ডিওএইচএস, বনানী, ঢাকা-১২১৩। ফোন: ৮৭৫২০৭৫, ০১৭৩০৭০৬২৫১-৫২।
পাকশী রিসোর্ট অফিসঃ পাকশী রিসোর্ট, ঈশ্বরদী, পাবনা। ফোন: ০১৭১১৯০৫৪৮৯,  ০১৭৩০৭০৬২৫৭-৮

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ ishwardipabnapakshiresort