মাত্র ১ দিনে শিমুল বাগান – জাদুকাটা নদী – বারেক টিলা- নীলাদ্রি লেক ঘুরে আসার প্ল্যান

চারিদিকে শিমুল বাগান এর কথা শুনে আর ছবি দেখে আপনিও ডিসিশন নিতে পারেন শিমুল বাগান যাওয়ার। কিন্তু শিমুল বাগানের সাথে যদি জাদুকাটা নদী, বারেক টিলা, নীলাদ্রি লেক ঘুরে আসতে পারেন তাহলে আর মন্দ কি? আর এগুলো মূলত সুনামগঞ্জের মেইন টুরিস্ট স্পট, সুনামগঞ্জের ট্যুরিস্ট স্পটগুলো কাভার করতে যে রুটটা ফলো করা দরকার বলে আমি মনে করছি সে সম্পর্কে বিস্তারিত নিম্নে দেওয়া হল:

রাতের বাসে কমলাপুর থেকে চলে যাবেন সুনামগঞ্জ। শ্যামলীর ননএসি বাস এর টিকেট ৬৫০ টাকা। বাসের সামনের সিট পেতে হলে অবশ্যই কস্ট করে ২-১ দিন আগে যেয়ে টিকেট কেটে আনতে হবে। অনলাইনেও টিকেট কাটা যায় Shohoz, Bdtickets থেকে। ভোর বেলা নামিয়ে দিবে সুনামগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড। স্ট্যান্ড এর অপর পাশেই হোটেল রোজ গার্ডেন। চাইলে সেখান থেকে নাস্তা করে নিতে পারেন অথবা যেতে পারেন সুনামগঞ্জের বিখ্যাত পানসী রেস্টুরেন্ট।

সকালের নাস্তা শেষে অটোতে করে নতুন ব্রিজ যাবেন ভাড়া নিবে ১০ টাকা। সুনামগঞ্জ নেমে নতুন ব্রীজের সামনে মোটরবাইক এবং সিএনজি দাঁড়িয়ে থাকে দাঁড়িয়ে থাকে। আপনি যদি কম সময়ে সুনামগঞ্জের টুরিস্ট স্পট গুলো যেমন শিমুল বাগান, বারেক টিলা, নীলাদ্রি লেক কম সময়ে ঘুরে আসতে চান তাহলে মোটরবাইক আপনার জন্য বেস্ট অপশন। তবে সিএনজি নিয়ে যেতে চাইলে যেতে পারবেন সেক্ষেত্রে ভাড়া কম পড়বে মোটরবাইকের চেয়ে। মোটর বাইকের সাথে কথা বলবেন আপনি যে সব জায়গায় যেতে চান। নরমালি ৭০০-১০০০ ভাড়া নিবে যাওয়া আসা, সাইট সিয়িং এর জন্য। ২ জন চড়া যায়। জনপ্রতি তাহলে ভাড়া পরল ৩৫০-৫০০ করে।

আর যদি কেউ সিএনজিতে যেতে চান তাহলে, নতুন ব্রিজ থেকে মিয়ারচর পর্যন্ত সিএনজিতে যেতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা. আর সিএনজি রিজার্ভ নিলে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা তে যেতে পারবেন। মিয়ারচড়ে নেমে আপনাকে জাদুকাটা নদী পার হতে হবে। জাদুকাটা নদী পার হতে আপনাকে নৌকায় উঠতে হবে। নৌকা ভাড়া জনপ্রতি ৫ টাকা। জাদুকাটা নদী পার হয়ে আপনি ইজিবাইক বা অটো বা টমটম এ করে যেতে পারেন শিমুল বাগান বারেক টিলা নীলাদ্রি লেক। অটোতে করে আপনি তিনটি স্পর্ট ঘুরে আসতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে যাওয়া আসার জন্য গুনতে হবে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। চার সিট বা ছয় সিটের অটো পাওয়া যায়।

ব্রীজ পার হলেই রাস্তার পাশে সূর্যমুখী বাগান পাবেন। চাইলে ঢু মেরে নিতে পারেন সূর্যমুখী বাগানে। সূর্যমুখী বাগানে যেতে চাইলে ১০ টাকা দিতে হবে। শিমুল বাগান যেতে আপনাকে পাড়ি দিতে হবে যাদুকাটা নদী। নৌকা দিয়ে নদী পার হতে হবে এবং ভাড়া নিবে জনপ্রতি ৫ টাকা। নৌকায় নদী পার হয়ে আপনাকে অতিক্রম করতে হবে ছয় কিলোমিটার রাস্তা। তাহলেই আপনি পেয়ে যাবেন আপনার কাঙ্খিত শিমুল বাগান। সেখানে ঘণ্টাখানেক থেকে ছবি তুলে চলে যেতে পারেন বারেক টিলা, যা থেকে পুরো জাদুকাটা নদীর সৌন্দর্য দেখা যায়। পাশেই সীমান্ত। বারেকটিলা এর ওপর পশে মেঘালয় এর অপরূপ রূপ যেইটা খুব সকলে না গেলে পাওয়া যায় না।

হেটে হেটে ঘুরে, ছবি তুলে আবার বারেক টিলার সামনে থেকে মোটরবাইক নিয়ে নীলাদ্রি লেক, টেকেরঘাট চুনাপাথরের নদী আর লাইমস্টোন এর পাহাড়। নীলাদ্রি এর অপরূপ সৌন্দর্য আপনাদের মুগ্ধ করবে। চাইলে আপনারা সেখনে গোসল ও করতে পারবেন & নৌকায় ও ঘুরতে পারবেন। নৌকার ভাড়া ঘণ্টাই ২০০ টাকা। এখানে একটা শহীদ মিনার আছে, আর আছে ব্রিটিশ আমলের একটা রেললাইন।

এরপরে আপনি চলে যেতে পারেন লাকমাছড়া ঝর্ণা। ঝর্না থেকে ফিরে আপনি বাদাঘাট অথবা কোনাইহাট গিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে নিতে পারেন। দুপুরের খাবার শেষে আপনি আবারো শিমুল বাগান যেতে পারেন। এবার শিমুল বাগান আপনাদের কাছে ধরা দিবে অন্য রূপে। চাইলে সেখানে থাকতে পারেন সূর্যাস্ত পর্যন্ত। পাশেই আছে বাঁশ বাগান, চাইলে সেখানেও ঘুরতে পারেন। তারপর ঐখান থেকে জাদুকাটা নদী পাড় হয়ে সুনামগঞ্জ নতুন ব্রিজে আসবেন।

নতুন ব্রিজ আসার পরে আপনি বিকালের নাস্তা সেরে নিতে পারেন। যেহেতু আপনার বাস ছাড়তে অনেক দেরি তাই আপনি সুনামগঞ্জ শহরে অবস্থিত হাসন রাজার বাড়ি থেকে ঘুরে আসতে পারেন। নতুন ব্রিজ থেকে হাসন রাজার বাড়ি পর্যন্ত অটোতে ভাড়া নিবে ১০ টাকা। তার পর হাসন রাজার বাড়ি থেকে আপনি চলে যেতে পারেন রিভার ভিউ পয়েন্ট। এখান থেকে আপনি উপভোগ করতে পারেন সুরমা নদীর অপরূপ সৌন্দর্য।

সুরমা নদীর অপরূপ সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে আপনাকে প্রিপারেশন নিতে হবে ঢাকা ফেরার। চাইলে আপনি রাতের খাবার সেরে নিতে পারেন পানসী রেস্টুরেন্টে। তারপরে যেকোনো বাসে চড়ে চলে আসতে পারেন ঢাকায়।

আর সবশেষে আরেকটি কথা। চিপ্স/ বিস্কুট/চক্লেট এর প্যাকেট, খালি পানির বোতল যেখানে সেখানে ফেলে আসবেন না। হ্যাপি ট্রাভেলিং।
Leave a Comment
Share