সাধারণত বাংলাদেশের পর্যটকরা শ্রীলংকা ও মালদ্বীপ একসঙ্গে ভ্রমণ করেন। কারণ কানেকটিং ফ্লাইটের কারণে প্লেনভাড়া বেঁচে যায়। বর্তমানে শ্রীলংকার মিহিন লঙ্কা এয়ারলাইন্স প্রতিদিন ঢাকা থেকে শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বো হয়ে মালদ্বীপের রাজধানী মালে যায়। ফলে মালের প্লেনের টিকিট কেটে একই খরচে শ্রীলঙ্কাটাও ঘুরে দেখে তারপর মালে যেতে পারেন।
আপনার ঢাকা থেকে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের জন্য একটি বিস্তারিত ট্যুর প্ল্যান সাজিয়ে দিচ্ছি, যেখানে ৯ দিনের শ্রীলঙ্কা ট্যুর অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
সকালে নিগোম্বো থেকে প্রাইভেট কার, ট্যাক্সি বা পাবলিক বাসে করে সিগিরিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিন, যা প্রায় ৪-৫ ঘণ্টার পথ। পথে চাইলে ডাম্বুলা গুহা মন্দির ঘুরে নিতে পারেন, যা শ্রীলঙ্কার অন্যতম বিখ্যাত বৌদ্ধ মন্দির। দুপুরের মধ্যে সিগিরিয়ায় পৌঁছে হোটেলে চেক-ইন করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন এবং স্থানীয় কোনো রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খেয়ে নিন। বিকেলে সিগিরিয়া রক ফোর্ট্রেস (Lion Rock) ভ্রমণে যান, যা শ্রীলঙ্কার বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত অন্যতম আকর্ষণ। প্রায় ১২০০ সিঁড়ি বেয়ে চূড়ায় উঠে অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং প্রাচীন রাজপ্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাবেন। সন্ধ্যার দিকে হোটেলে ফিরে এসে বিশ্রাম নিন অথবা স্থানীয় বাজার ও রেস্টুরেন্টে ঘুরে শ্রীলঙ্কার ঐতিহ্যবাহী খাবার উপভোগ করুন।
সকালে নিগোম্বোতে নাস্তা সেরে প্রাইভেট কার, ট্যাক্সি বা লোকাল বাসে সিগিরিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিন, যা প্রায় ৪-৫ ঘণ্টার পথ। দুপুরের মধ্যে পৌঁছে হোটেলে চেক-ইন করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন এবং স্থানীয় রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খান। বিকেলে সিগিরিয়া রক ফোর্ট্রেস (Lion Rock) পরিদর্শনে যান, যেখানে ১২০০ সিঁড়ি বেয়ে চূড়ায় উঠে প্রাচীন রাজপ্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ ও চারপাশের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করা যাবে। সন্ধ্যার দিকে হোটেলে ফিরে বিশ্রাম নিন অথবা স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখুন এবং ঐতিহ্যবাহী শ্রীলঙ্কান খাবার উপভোগ করুন।
সকালে কান্ডি থেকে নুয়ারা এলিয়ার উদ্দেশ্যে ট্রেন বা প্রাইভেট গাড়িতে রওনা দিন, যা প্রায় ৪ ঘণ্টার মনোমুগ্ধকর পথ। ট্রেন ভ্রমণ হলে পাহাড়ি পথের চা বাগান, ঝর্ণা এবং সবুজ উপত্যকার সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে। নুয়ারা এলিয়ায় পৌঁছে হোটেলে চেক-ইন করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন। দুপুরের পর পেড্রো টি ফ্যাক্টরি এবং আশপাশের চা বাগান ঘুরে দেখে শ্রীলঙ্কার বিখ্যাত সিলন চায়ের উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানুন এবং ফ্রেশ টি টেস্ট করুন। এরপর গ্রেগরি লেকে নৌকাভ্রমণ উপভোগ করুন এবং লেকের চারপাশে হালকা হাঁটাহাঁটি করুন। সন্ধ্যায় শহরের স্থানীয় বাজার বা ক্যাফেগুলোতে ঘুরে দেখুন এবং রাতে নুয়ারা এলিয়াতেই থাকুন।
সকালে নুয়ারা এলিয়া থেকে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে সুন্দর ট্রেন যাত্রার মাধ্যমে এলার উদ্দেশ্যে রওনা দিন, যা প্রায় ৩-৪ ঘণ্টার মনোরম পথ। ট্রেনের জানালা দিয়ে নয়নাভিরাম চা বাগান, সবুজ পাহাড় ও মেঘে ঢাকা উপত্যকার দৃশ্য উপভোগ করুন। এলা পৌঁছে হোটেলে চেক-ইন করে বিশ্রাম নিন। দুপুরের পর ছোট আদামস পিক ট্রেকিং করুন, যেখান থেকে পাহাড়ি প্রকৃতির অসাধারণ দৃশ্য দেখা যায়। এরপর বিখ্যাত ৯ আর্চ ব্রিজ পরিদর্শন করুন, যেখানে ট্রেন চলাচলের দৃশ্য মুগ্ধ করবে। সন্ধ্যায় এলার ক্যাফে ও স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখুন এবং রাতে এলাতেই থাকুন।
সকালে এলা থেকে গাড়িতে প্রায় ৩ ঘণ্টার যাত্রায় ইয়ালা ন্যাশনাল পার্কের দিকে রওনা দিন। দুপুরের আগে ইয়ালায় পৌঁছে হোটেলে চেক-ইন করুন ও হালকা বিশ্রাম নিন। বিকেলে ইয়ালা ন্যাশনাল পার্কে জিপ সাফারিতে অংশ নিন, যেখানে হাতি, চিতা বাঘ, হরিণ, ময়ূরসহ নানা বন্যপ্রাণী দেখার সুযোগ পাবেন। সাফারির সময় ক্যামেরা প্রস্তুত রাখুন এবং গাইডের নির্দেশনা মেনে চলুন। সন্ধ্যার দিকে হোটেলে ফিরে আসুন, রাতে স্থানীয় খাবার উপভোগ করুন এবং ইয়ালাতেই রাত্রিযাপন করুন।
সকালে নাস্তার পর ইয়ালা ন্যাশনাল পার্কে পূর্ণদিবস সাফারিতে অংশ নিন, যেখানে শ্রীলঙ্কার সমৃদ্ধ বন্যপ্রাণী ও বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি উপভোগ করতে পারবেন। দিনের বিভিন্ন সময়ে হাতি, চিতা বাঘ, হরিণ, ময়ূর ও নানা প্রজাতির পাখি দেখার সুযোগ থাকবে। দুপুরে পার্কের নির্ধারিত জায়গায় বিশ্রাম নিন ও হালকা খাবার খান। বিকেলে চাইলে আরও একটি সাফারি ট্রিপ নিতে পারেন বা পার্কের আশপাশ ঘুরে দেখুন। সন্ধ্যায় হোটেলে ফিরে বিশ্রাম নিন অথবা রাতের দিকেই মিরিসার উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারেন, যা প্রায় ৩-৪ ঘণ্টার পথ।
সকালে ইয়ালা থেকে প্রাইভেট কার বা ট্যাক্সিতে প্রায় ৩ ঘণ্টার যাত্রায় মিরিসার উদ্দেশ্যে রওনা দিন। মিরিসায় পৌঁছে হোটেলে চেক-ইন করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন। দুপুরের পর মিরিসা বিচে গিয়ে রিল্যাক্স করুন, সমুদ্রের নীল জলরাশি ও সূর্যাস্ত উপভোগ করুন। চাইলে সৈকতে হাঁটাহাঁটি করতে পারেন বা স্থানীয় রেস্টুরেন্টে গিয়ে সামুদ্রিক খাবারের স্বাদ নিতে পারেন। সন্ধ্যায় মিরিসার শান্ত পরিবেশ ও বীচ ক্যাফেগুলো উপভোগ করুন এবং রাতে মিরিসাতেই থাকুন।
অষ্টম দিন, মিরিসা থেকে গলে যাত্রা শুরু করুন সকালবেলা, যা প্রায় ২ ঘণ্টার পথ। গলে পৌঁছে, আপনি গলের বিখ্যাত ডাচ ফোর্ট পরিদর্শন করতে পারেন, যা ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। এরপর লাইটহাউজ দেখে সমুদ্রতীরের সৌন্দর্য উপভোগ করুন। গলের পাথুরে সৈকত ও শান্ত পরিবেশে এক অপরূপ অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে। দিন শেষে, গলে ফিরে এসে রাতে এখানেই থাকার পরিকল্পনা করুন।
নবম দিনে, সকালের দিকে গলে থেকে কলম্বোর উদ্দেশ্যে রওনা দিন, যা প্রায় ২-৩ ঘণ্টার পথ। কলম্বো পৌঁছানোর পর সিটি ট্যুর শুরু করুন, যেখানে আপনি গাঙ্গারামায়া মন্দিরের সৌন্দর্য দেখতে পাবেন, লোটাস টাওয়ারের শিখর থেকে শহরের দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন এবং পেট্টাহ মার্কেটের উন্মুক্ত পরিবেশে কেনাকাটা করতে পারবেন। বিকেলের দিকে বা পরের দিন সকালে, ঢাকা ফেরার জন্য আপনার ফ্লাইট ধরুন।
ব্যাস, ৯ দিনে শ্রীলঙ্কার অন্যতম সুন্দর সব জায়গা ঘুরে আসতে পারবেন! 😊✈️
Leave a Comment