কুমিল্লা ডে ট্যুর

যারা সীতাকুন্ড অথবা চট্টগ্রামের দিকে ট্যুর দিতে চান, তাদের জন্য ব্রেকে কুমিল্লা হতে পারে বেষ্ট চয়েজ। পাহাড়, সমাধি, দীঘী, জংগল কি নেই!

কুমিল্লা এর দর্শনীয় স্থানসমূহ

কুমিল্লা কিভাবে যাবেন

যদি একদিনে ঢাকা থেকে কুমিল্লা কভার করে সন্ধ্যায় পরবর্তী গন্তব্যে যেতে চান তাহলে সকাল সাতটায় বের হয়ে যাত্রাবাড়ি থেকে বাসে উঠে বসেন। এসি-ননএসি ভাড়া ১০০-৩০০ পড়বে। আর লোকালে অবশ্যই দামাদামি করবেন বেশী হলে ১২০-১৫০ টাকা। ১১০-১২০ দিতে চেষ্টা করবেন। রাস্তায় জ্যাম না থাকলে দুই-আড়াই ঘন্টার মধ্যে পৌছে যাবেন।

ট্রেনেঃ যেকোনো রেল স্টেশন থেকে লাকসাম জংশন। সেখান থেকে সোজা বাসে বিশ্বরোড।

কুমিল্লা কিভাবে ঘুরবেন

যদি ময়নামতি ওয়্যার সেমেট্রি দেখতে চান তাহলে কুমিল্লা ক্যান্টনম্যান্ট নামতে হবে। এখান থেকে অটোতে করে ময়নামতি ওয়্যার সেমেট্রি। ইংরেজ কবরস্থান বললে যে কোনো অটোওয়ালা নিয়ে যাবে। হেটে গেলে ১০-মিনিট লাগবে।

ওয়ার সেমেট্রি বিকাল চার টার সময় বন্ধ করে দেয়।

আর যদি ময়নামতি ওয়্যার সেমেট্রি না দেখতে চান তাহলে বাসের সুপারভাইজারকে বলবেন কুমিল্লা বিশ্বরোড কোটবাড়ি রোডে নামায় দিতে।

বিশ্বরোড কোটবাড়ি বাস স্ট্যান্ড থেকে শালবন বিহার ৩ কিলোমিটার। ২০ টাকা জনপ্রতি সিএনজি করে শালবন বিহার। একে একে লালমাই পাহাড়, শালবন বিহার, বৌদ্ধ মন্দির, রুপসাগড় পার্ক, ব্লু ওয়াটার পার্ক, ম্যাজিক প্যারাডাইস, ডাইনাসোর পার্ক, ফান টাউন ময়নামতি জাদুঘর সব ঘুরা শেষ হলে ১০ টাকা দিয়ে অটো করে ইটাখোলা মুড়া চলে আসেন।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দেখে অটো করে বার্ডে এসে দুপুরের লাঞ্চ করবেন। বার্ডে নীলাচল পাহাড়, দীপু নাম্বার টু মুভির বিখ্যাত পানির ট্যাংক দেখবেন।

ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ক (Magic Paradise Park) ১৬ ডিসেম্বরে ঊন্মুক্ত করা হয়েছে। এজন্য প্রবেশ ফি, রাইড সম্পর্কে তেমন কিছুই জানি না।

রুপসাগর পার্কের পূর্ব পাশে বিশ্বযুদ্ধ স্বরণী। এতোদিন মাটির নিচে ছিলো, কিছুদিন আগে আবিষ্কার হয়েছে। এর উত্তরে আছে রানীর বাংলো। 

ডায়নাসোর পার্ক – ডায়নাসোর পার্ক এর লোকেশন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে। ডায়নাসোর পার্ক (Dinosaur Park) দেশের একমাত্র ডায়নো পার্ক।

ফানটাউন – কুমিল্লা ইপিজেড থেকে উত্তরে অটোতে ১৫ টাকা ডুলিপাড়া রোড।

ময়নামতি শালবন বিহারে দুটি পিকনিক স্পট আছে। গ্রুপ নিয়ে বেশ ভালোই একটা দিন যাবে।

ব্লু ওয়াটার পার্ক যেভাবে যাবেন – শালবন বিহার থেকে পশ্চিমে হেটে অথবা অটোতে যেতে পারেন। ১৫ টাকা, ২০ মিনিট লাগবে হেটে গেলে।

শালবন বিহার+বৌদ্ধমন্দির+রুপসাগড় পার্ক+ব্লু ওয়াটার পার্ক+ডায়নাসোর পার্ক+ফানটাউন প্রবেশ ফি ২০+২০+৫০+১০০+১০০+১০০ টাকা।

পার্কে রাইডে চড়তে হলে মানিব্যাগে মানি থাকা চাই।

উপরের বর্ণাতীত জায়গাগুলো কাছাকাছি হেটে অথবা অটোতে কভার করতে পারবেন।

যদি হাতে দিনের বেশ কিছুটা সময় থাকে তাহলে ঘুরে আসতে পারে শহর ঘেষা বিখ্যাত ধর্মসাগর দীঘী, রানী কুঠির প্রাসাদ, কুমিল্লা শহর থেকে।

যাতায়াত – বিশ্বরোড কোটবাড়ি বাস স্ট্যান্ড থেকে জনপ্রতি ২০ টাকা সিএনজি করে ধর্মসাগড়, কুমিল্লা শহর।

নোটঃ যদি কুমিল্লার বাসে উঠেন, তাহলে ক্যান্টনমেন্ট অথবা বিশ্বরোড় কোটবাড়ি রোড়ে নামবেন, নাহলে একেবারে শাষনগাছা নিয়া নামাবে। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের ভিতর দিয়েও শালবন বিহারে যাওয়া যায়। এজন্য আপনাকে চেকপোষ্টে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ভিতরে ঢুকবেন। ২-৩ মিনিট হাটলে ইস্পাহানী স্কুলের বরাবর বাসের টিকিট সেল করে। ওখান থেকে ২০ টাকা দিয়ে টিকিট কিনে বাসে চড়ে বসবেন, আপনাকে ১৬ নাম্বার গেটে নামায় দিবে। অনেক সময় নিরাপত্তার জন্য ভিতরে ঢুকতে দেয় না। এখানেও পশ্চিমে (বিহার) আছে। চাইলে ঘুরতে পারেন। বোনাস হিসেবে থাকছে সেনানিবাসের সৌন্দর্য। ২০ মিনিট লাগবে।

১৬ নাম্বার গেটের কাছ থেকে অটোতে করে শালবন বিহার। ২০ টাকা+২০ মিনিট লাগবে।

বোনাস হিসেবে থাকছে কুমিল্লার বিখ্যাত মাতৃভান্ডারের রসমালাই এবং খদ্দর। রসমালাইয়ের কেজী ২৫০ টাকা। খদ্দরের চাদর কিন্তু এই শীতে প্রিয়জনকে উপহার দিতে পারেন।

কুমিল্লাতে রাস্তার পাশে অসংখ্য মাতৃভান্ডার আছে। আপনি যদি আসল মাতৃভান্ডারের জন্য ইন্টারেস্টেড হোন, তাহলে চলে যাবেন মনোহরপুর।

আসল মাতৃভান্ডার (Comilla Original Matri Bhandar) স্বত্বাধিকারীর ফোন নাম্বারঃ ৭৬২৩৩। মোবাইল নাম্বারঃ ০১৭১২৫৪৫৪০১

যেভাবে যাবেনঃ বিশ্বরোড থেকে অটোতে ২০ টাকা দিয়ে কান্দিরপাড়, তারপর রিক্সা ১৫ টাকা দিয়ে মনোহরপুর।

আসল মাতৃ ভান্ডার, কুমিল্লা

কান্দিরপাড় থেকে রিক্সাতে ভিক্টোরিয়া কলেজে, কালী মন্দির, টাওন হল ইত্যাদি জায়গা ঘুরতে পারেন।

কানে হ্যাডফোন গুজে, সারাদিনের একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে যাবেন। ৭০০ টাকাতে হয়ে যাবে আপনার ভ্রমণ।

কোনো প্রকার তথ্য জানতে আমাকে নক দিতে পারেন। হ্যাপি ট্রাভেলিং ইন মাই বিউটিফুল হোমটাউন কুমিল্লা ❤

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ comilladaytripkumilla