বিপদজনক খৈয়াছড়া – প্রস্তুতি এবং করনীয়

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে যতগুলো ঝর্ণা রয়েছে তার মাঝে সবচেয়ে বেশী পর্যটক যায় খৈয়াছড়া ঝর্ণাতে। মীরসরাই রেন্জের সবচেয়ে বড় ঝর্ণা এটি। এই ঝর্ণার একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এতে সারাবছর পানি পাওয়া যায় আর এটি বাংলদেশের সবচেয়ে বেশী ধাপ বিশিষ্ট ঝর্ণা। এর ধাপ সংখ্যা ১৩ টি। এছাড়া এর উৎসস্থলে রয়েছে ছোট একটি লেক। এই ঝর্ণার ট্রেইল ও ঝিরি পথটাও অসাধারণ।

খৈয়াছড়া ঝর্ণা

এবার আসি কেন এটি বিপদজনক? প্রতিবছর খৈয়াছড়াতে মানুষ মারা যাচ্ছে বা পঙ্গু হচ্ছে। এতগুলো এক্সিডেন্ট হওয়ার পিছনের প্রধান কারণগুলো হলো –

  • উক্ত ঝর্ণা সম্পর্কিত স্পষ্ট ধারণা না থাকা।
  • বেশী এডভেঞ্চার করতে যাওয়া
  • নিরাপত্তা বিষয়ক কিছু ব্যাবহার না করা
  • ট্রেকিং সু ব্যাবহার না করা
  • শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে না পারা
  • অতিরিক্ত তারুন্য সুলভ আচরণে
  • নতুন ট্রেকার

খৈয়াছড়া গঠনশৈলী একটু ভাঙ্গুর টাইপের। এর পাথর গুলো এত পিচ্ছল যে ভালো ট্রেকিং সু না পরলে সহজেই স্লিপ খায়। প্রতিটি ধাপ ২০-৭০ ফিট উঁচু। এর কারণে কেউ একবার স্লিপ খেলে মৃত্যু সহ যে কোন দুঘর্টনা সহজে ঘটতে পারে। এছাড়া এর পাথরগুলো আলগা ধরণের প্রায় জায়গাতেই বড় বড় পাথরের চিপায় রয়েছে বিশাল গর্ত। যা আপনার পা ভাঙ্গা ও মচকানোর জন্য যথেষ্ট।

খৈয়াছড়ার পদে পদে যে কি বিপদ লুকিয়ে আছে তা শীতে গেলে সহজে অনুমান করতে পারবেন।

খৈয়াছড়া যাওয়ার পথটা এমনই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে।

খৈয়াছড়া গেলে করণীয়

  • লাঠি ★ অবশ্যই লাঠি নিয়ে যাবেন যা আপনাকে গর্ত বের করতে এবং আপনার চলার পথে চলতে সাহায্য করবে।
  • ট্রেকিং সু ★ এটি পিচ্ছিল পথে স্লিপ থেকে বাঁচাবে।
  • রোপ/দঁড়ি ★ উপরে উঠতে সাহায্য করবে এছাড়া ফ্লাসফ্লাড থেকে বাঁচাতে হেল্প করবে। পাশাপাশি ঝিরি পথ পার হতে অনেক হেল্প করবে।
  • সচেতনতা ★ আপনার ভ্রমণ নিরাপদ করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে সচেতনতা। দেখেন আমরা ঘুরতে চাই দেশের নান প্রান্তে, মোটামুটি ইন্টারনেট ঘাটলে সবজায়গা সম্পর্কে সহজে ধারণা পাবেন। যা পারবেন না তা না করাই শ্রেয়। আপনার যদি ট্রেকিং করার অভ্যাস না থাকে তাহলে কখনো এইসব জায়গার উপরে উঠতে যাবেন না।

এখন পর্যন্ত খৈয়াছড়াতে ১০+ মানুষ মারা গেছে এাছাড়া হাত পা ভাঙ্গছে প্রায় ৫০ জনের কাছাকাছি। তাই সকলের কাছে অনুরোধ খৈয়াছড়ার উপরের ধাপ গুলো তে উঠার সময় দয়া করে নিরাপত্তা সামগ্রী নিয়ে উঠবেন। কারণ প্রতিটি ধাপের উচ্চতা ২০-৭০ ফুটের মত। একবার চিন্তা করেন একবার স্লিপ খেয়ে পরলে কি অবস্থা হতে পারে। এাছাড়া প্রায় পাথরগুলো আলগা তাই পা দেওয়ার আগে ভালো করে খেয়াল করে পা দিবেন। আর একটা কথা উপরে উঠার পর বৃষ্টি হবে এমন অবস্থা বুঝেন তাহলে যত দ্রুত পারেন নিচে নেমে আসবেন। কারণ বৃষ্টি হলে নামাটা খুব রিস্কি।

যেখানে ঘুরতে যাবেন নিজে সচেতন হন অন্যকে সচেতন করুন। আপনাদের একটু অসচেতনার জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে এত সুন্দর একটা ঝর্ণা।

Leave a Comment
Share