এআইজি হাসপাতাল এবং আমার ডাক্তার দেখানোর অভিজ্ঞতা

বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ চিকিৎসার জন্য সিএমসি ভেলোরে যায়, এজন্য সিএমসি সম্পর্কিত অনেক তথ্য পাওয়া যায়। এআইজি হাসপতাল (AIG Hospitals), হয়দ্রাবাদে সেই তুলনায় কম মানুষ যায়। এজন্য এআইজি হাসপাতাল সম্পর্কে এবং এইআইজি’তে চিকিৎসা খরচ সম্পর্কে  বিস্তারিত বলবো আজ। আমি আমার সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা থেকে লেখাটা লিখছি। তবে লেখাটা এআইজি গাচ্ছিবলিকে নিয়ে লেখা, এর পুরানোটা সমাজিগোদা হয়দ্রাবাদে অবস্থিত, যার সম্পর্কে আমি কিছু জানিনা। তবে শুনেছি, সেরা ডাক্তারগুলো এআইজি গাচ্ছিবলিতে বসেন, ডাঃ নাগেশ্বর রেড্ডিও এখানে রোগী দেখেন।

এআইজি হাসপাতাল কিসের জন্যে বিখ্যাত?

এআইজি এর এব্রিভিয়েশন হলো এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব গ্যাস্ট্রোএন্টেরলজি (Asian Institute of Gastroenterology), নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এই হাসপাতালে  গ্যাস্ট্রোএন্টেরলজি বিষয়ক রোগের চিকিৎসা হয়। ওরা নিজেদের মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটাল দাবি করলেও আসলে গ্যাস্ট্রোএন্টেরলজি সম্পর্কিত রোগের চিকিৎসার জন্যই বেশিরভাগ মানুষ ওখানে যায়। পাকস্থলি, অন্ত্র (বাওয়েল), পিত্তথলি (গলব্লাডার), অগ্নাশয় (প্যানক্রিয়াস), স্প্লীহা (স্পিন) এগুলো  গ্যাস্ট্রোএন্টেরলজি অংশ আর যকৃত (লিভার) সম্পর্কিত বিষয় হেপাটোলজি’র অন্তর্গত, আর দুইটা একসাথে গ্যাস্ট্রোএন্টেরলজি এন্ড হেপাটোলজি। কোলন, রেক্টাম এবং এনাস সম্পর্কিত রোগের চিকিৎসা সাধারণত কোলোরেক্টাল সার্জনরা করে থাকেন, তবে আমার জানা কিছুটা ভুল হতে পারে, যেহেতু আমি মেডিক্যাল রিলেটেড পার্সন না।

এআইজি হাসপাতাল, গাচ্ছিবলি, হয়দ্রাবাদ

এআইজি হাসপতাল  পিত্তথলি (গলব্লাডার), অগ্নাশয় (প্যানক্রিয়াস), স্প্লীহা (স্পিন) সম্পর্কিত চিকিৎসার জন্য ভারতের সেরা হাসপাতাল। আর এই অসুখগুলোর চিকিৎসা সাধারণত এন্ডোস্কপিক প্রসিডিউর এর মাধ্যমে করা হয়। হেপাটোলজি চিকিৎসার জন্যও হাসপাতালটি অন্যতম সেরা। ওখানে কার্ডিওলজি (হার্ট), নেফ্রোলজি (কিডনি), অর্থোপেডিকস, নিউরোলজি সহ অন্যান্য বিভাগও আছে, তবে ঐ বিভাগগুলোতে ডক্তারের সংখ্যা কম। এই হাসপাতালের সেরা ডাক্তারের নাম ডাঃ নাগেশ্বর রেড্ডি (পদ্মভূষন) , উনাকে বলা হয় মাস্টার অব এন্ডোস্কপি এবং  এন্ডোস্কপিক প্রসিডিউর (যেমন ইআরসিপি) জন্য তিনি শুধু ভারতেরই নন, বিশ্বের সেরা ডাক্তারদের একজন। তবে উনাকে আপনি সরাসরি দেখাতে পারবেন না, অন্য কোনো ডাক্তার যদি উনাকে রেফার করেন তবেই উনি দেখবেন এবং উনি শুধু জটিল কেসগুলোই দেখেন। তবে  গ্যাস্ট্রোএন্টেরলজি ডিপামেন্টের সব সিনিয়র ডাক্তারই উনার টিমের অন্তর্ভূক্ত এবং তারা সবাই অত্যন্ত অভিজ্ঞ এবং দক্ষ ডাক্তার, যেমন: ডাঃ সন্দীপ লাখটাকিয়া, ডাঃ মোহন রামচান্দানি, ডাঃ রুপজ্যোতি তালুকদার, ডাঃ আসিফ, ডাঃ রূপা ব্যানার্জি ইত্যাদি। ডাক্তারদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এআইজি’র ওয়েবসাইটে পাবেন।

এআইজি  হাসপতালের চিকিৎসা খরচ

এআইজি হাসপাতাল বিষয়ে মানুষের প্রধান জিজ্ঞাসা থাকে, ঐ হাসপাতালে খরচ কেমন? এর উত্তরে বলা যায়, এটা যেহেতু একটা প্রাইভেট হাসপাতাল তাই এর চিকিৎসা খরচও বেশি। তুলনাটা যদি সিএমসি এর সাথে হয়, তাহলে তো বেশিই, আর তুলনাটা যদি বাংলাদেশের এভারকেয়ার, ইউনাইটেড, স্কয়ার বা বিআরবি হাসপাতালের সাথে হয়, তাহলে আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো, হ্যাঁ তাদের চাইতে কম। কারণ আমার স্কয়ার এবং বিআরবি তে চিকিৎসা নেয়ার অভিজ্ঞতা আছে, এভারকেয়ার বা ইউনাইটেডে নাই, এভারকেয়ার বা ইউনাইটেডে খরচ স্কয়ার বিআরবি এর চেয়ে বেশিই হওয়ার কথা। এআইজি হাসপাতালে একজন বিশেষজ্ঞ ডাঃ এর কনসাল্টেশন ফি ৪৮০ রুপি, এমনকি ডাঃ নাগেশ্বর রেড্ডিরও একই! মানি রিসিপ্ট এ লেখা থাকে “one free consultation within 7 days” মানে ৭ দিনের জন্য আরেকবার ডাঃ এর সাথে ফ্রি কনসাল্টেশন করতে পারবেন। তবে আপনাকে একটা জিরো রিসিপ্ট কাটতে হবে। আমি একই রিসিপ্ট দিয়ে ৩ বারও দেখাতে পেরেছি।

এখানে একটা কথা বলে রাখা ভালো, এআইজিতে বিদেশীদের চিকিৎসা খরচ  ভারতীয়দের তুলনায় বেশি। দেশভেদে এটার ভিন্নতা আছে, বাংলাদেশিদের জন্য ২০% বেশি, মানে ভারতীয়দের জন্য কনসাল্টেশন ফি ৪০০ রুপি, বাংলাদেশিদের জন্য ৪৮০ রুপি, বিভিন্ন ইনভেস্টিগেশন (টেস্ট) ফি, প্রসিডিউর, আপরেশন সবকিছুর চার্জ ২০% বেশি। তবে আপনার চিকিৎসা খরচ যদি অনেক বেশি হয়ে যায়, তবে হাসপাতালের চেয়ারম্যান (ডাঃ নাগেশ্বর রেড্ডি) বরাবর আবেদন করলে আপনাকে চার্জ  ২০% রিডিউস করে দিতে পারে, মানে ভারতীয়দের সমান। টেস্ট ফি কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি কিছু ক্ষেত্রে কম। ব্লাড টেস্ট, সিটি স্ক্যান, এমআরই  এর খরচ বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ড হাসপতালগুলোর সমান, তবে কোয়ালিটি ভালো, তাদের মেশিন গুলো অত্যাধুনিক। ব্লাডের টেস্ট গুলোতে আপনার টোটাল খরচ হতে পারে ৩ থেকে ৫ হাজার রুপি। সিটি স্ক্যান এবং এমআরআই এর খরচ ৮ থেকে ১১ হাজার রুপি (প্রতিটি), খরচের তারতম্য হওয়ার কারণ হলো, সিটি-এমআরআই দিয়ে অনেক রকমের টেস্ট হয়। আপনি যে সমস্যা নিয়েই যান আপনাকে এই টেস্ট গুলো দিবেই,কারণ এখনকার চিকিৎসা ইভেস্টিগেশন বেজড্। যে টেস্টের খরচ কম তা হলো এন্ডোস্কপি আর কোলোনোস্কপি। আমার এই দুইটা টেস্ট করাতে মোট খরচ হয়েছে ৭৮৮০ রুপি মাত্র। আর ওদের এন্ডোস্কপি আর কোলোনোস্কপি করার প্রক্রিয়াটা ওয়ার্ল্ড ক্লাস। সেন্ট্রাল এনেসথেসিয়া দেয়া হবে, আপনি টেরই পাবেন না।

এই হাসপাতালে সবচেয়ে বেশি যে রোগ নিয়ে মানুষ আসে তা হলো প্যানক্রিয়াটাইটিস। প্যানক্রিয়াটাইটিস এর একটা কমন চিকিৎসা হলো ইআরসিপি স্ট্যান্টিং। রোগের জটিলতা ভেদে এর চিকিৎসা খরচ নির্ভর করে। খরচটা কম বেশি ৫০ হাজার রুপি থেকে ২ লাখ রুপি পর্য ন্ত, প্লাস আপনার টেস্ট খরচ, যা হতে পারে ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার রুপি পর্যন্ত। মানে আপনার যদি ইআরসিপি স্ট্যান্টিং করা লাগে তাহলে আপনার খরচ হতে পারে কম-বেশি  এক লাখ রুপি থেকে আড়াই লাখ রুপি পর্যন্ত। কোলন বা রেক্টামে কোনো পলিপ জাতীয় কিছু থাকলে খরচ হতে পারে ১৫,০০০ রুপি থেকে ৭৫,০০০ রুপি পর্যন্ত। আপনার সমস্যা যদি আইবিএস হয় তাহলে শুধু টেস্ট খরচ লাগবে, কারণ আইবিএস কোনো প্রাণঘাতী রোগ নয়, এর কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নাই, কিছু অষুধ আর কিছু নিয়মকানুন পালন করতে হয়। আইবিডি হলে খরচ হতে পারে ১লাখ থেকে ২লাখ রুপি। গলব্লাডার এর চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার থেকে ১.৫ লাখ রুপি পর্য ন্ত। আপনার প্যানক্রিয়াসে যদি পাথর থাকেে আর ইআরসিপি  এর মাধ্যমে যদি সেটা রিমুভ করা সম্ভব না হয়, তাহলে আপনার ওপেন অপারেশন করা লাগবে। সেক্ষেত্রে খরচ হবে ৩ থেকে ৫ লাখ রুপি পর্যন্ত। যে কোনো ওপেন অপারেশনের জন্য খরচটা এরকমই হবে। পরিচিত একজনের লিভারের একটা অংশ কেটে বাদ দিতে বলেছে, হাসপাতাল থেকে উনাকে ইস্টিমেট দিয়েছে সাড়ে তিন লাখ রুপি, শুধু প্রসিডিউর চার্জ (অপারেশন), তারপর অষুধ, টেস্ট, কেবিন/বেড চার্জ যোগ হবে। চিকিৎসা খরচের সব বিবরণ আমি দিয়েছি ওখানকার অন্য রোগীদের কাছ থেকে ধারণা নিয়ে, হাসপাতাল সোর্স  থেকে নয়। ওখানকার আউটপেশেন্ট (ওপি) বিলিং এবং ইনপেশেন্ট (আইপি) বিলিং থেকে অপারেশন/প্রসিডিউর সম্পর্কে  জানা যায়, তবে তারাও বলে দেয়, এটা একটা ইস্টিমেশন, একচুয়াল বিল বেশি/কম হতে পারে। তবে সব চিকিৎসারই খরচ নির্ভর করে আপনার রোগটি কতটা জটিল পর্যায়ে গেছে তার উপর। আমি একজন বাংলাদেশি পেশেন্ট দেখেছি যিনি প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সারে আক্রান্ত, উনার শুধু স্ট্যান্টিং প্রসিডিউরে খরচ হয়েছে সাড়ে তিন লাখ রুপি, অষুধ, টেস্ট, কেবিন সহ অন্যান্য সকল খরচ বাদে। উনি চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করে মোট ৬০ হাজার রুপি কনসেশন পেয়েছিলেন। বেড চার্জ ১২০০ রুপি আর কেবিন চার্জ ৫০০০ রুপি+। ওখানের কেবিনে আপনি ৫ স্টার হোটেল এর ফিলিং পাবেন। 

তবে যারা ক্যান্সার এর পেশেন্ট তাদের চিকিৎসা খরচ সম্পর্কে ধারণা দিতে পারছি না, এজন্য দুঃখিত। আপনারা এআইজি হাসপাতালের ইন্টারন্যাশনাল বিভাগে পুরাতন সকল চিকিৎসা ডকুমেন্টস সহ ই-মেইল করতে পারেন, তারা আপনাকে রিপ্লাই দিবে।

এআইজি হাসপাতালে চিকিৎসা খরচ সহনীয়, ওখানে আমি ভারতের অটো (আমরা যাকে সিএনজি বলি) চালক বা সিমিলার পেশার লোকেদের পর্যন্ত কনসাল্টেশন/চিকিৎসার জন্য আসতে দেখেছি। তবে আপনাকে প্রচুর টেস্ট দিবে ওরা, যা অনেকের কাছে অপ্রয়োজনীয় মনে হতে পারে। আপনার যদি দেশে মাঝারি মানের হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ্য থাকে তাহলে আপনি ওখানের চিকিৎসা খরচও বহন করতে পারবেন। তবে একটা অনুরোধ দেশে আগে একটু চেষ্টা করুন, বোঝার চেষ্টা করুন আপনার সমস্যাটি কতটা জটিল, তারপর ভারত যাবার সিদ্ধান্ত নিন।

এপয়ন্টমেন্ট ও ভিসা

এপয়ন্টমেন্ট

এপয়েন্টমেন্টের জন্য আপনার অসুখের বর্তমান অবস্থা বর্ণনা করে দেশে চিকিৎসার সকল রিপোর্ট  স্ক্যান করে এই ঠিকানায় ই-মেইল করে তাদের কাছে, ট্রিটমেন্ট প্ল্যান, খরচ এবং চিকিৎসার সময় সম্পর্কে জানতে চান। বাংলাদেশের ডাঃ এর প্রেসক্রিপশন  ইমেইলে করবেন না, কারণ ওরা এটা বুঝবে না। ইমেইলে অব্যশ্যই রোগীর নাম, বয়স এবং জাতীয়তা উল্লেখ করবেন। ফিরতি ই-মেইলে ওরা আপনার মেইলের যতটা সম্ভব উত্তর দিয়ে আপনার  কাছে রোগীর নাম, পাসপোর্ট নম্বর, এটন্ডারের নাম, পাসপোর্ট নম্বর এবং এপয়মেন্টের তারিখ জানতে চাইবে। আপনার যদি ভিসা না থাকে তাহলে  ১৫-৩০ দিন পরে  এপয়েন্টমেন্টর তারিখ দিন, কারণ এ ই সময়টা আপনার ভিসা সংক্রান্ত কাজে লাগতে পারে, ডাঃ এর নাম অপশনাল, আপনি কোনো ডাঃ নাম দিলে ওরা আপনার অসুখের সাথে রিলেটেড একজন ডাঃ এর নাম দিয়ে আপনাকে এপয়মেন্ট লেটার পাঠিয়ে দেবে।

ওয়েবসাইট – https://aighospitals.com

ভিসা, টিকিট, এয়ার সুবিধা, ফ্লাইট বোডিং

আপনি যেহেতেু মেডিকেল ভিসায় যাচ্ছেন, তাই আপনাাকে মেডিকেল ভিসা ও এটন্ডারকে মেডিকেল এটেন্ডার ভিসার জন্য এপ্লাই করতে হবে।  আপনি নিজেই (https://indianvisa-bangladesh.nic.in/visa) ভিসার জন্য এপ্লাই করতে পারবেন, কোনো দালালের প্রয়োজন নেই। আপনি যে জায়গায় আটকাতে পারেন, তার সমাধান এখানে পাবেন। অবশ্য আপনি কনফিডেন্ট না হলে, দালালের সাহায্য নিতে পারেন, এজন্য আপনার কাছ থেকে ওরা এপ্লিকেশন প্রতি ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত নিতে পারে।

ভারতের মেডিক্যাল ভিসা কিভাবে করবেন এবং কি কি ডিকুমেন্ট লাগবে

নিচে আমি ভিসা এপ্লিকেশনের ধাপ গুলো উল্লেখ করছি:

  • আপনি সরকারি, আধা সরকারি বা স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থায় চাকরি করলে প্রথমে GO/NOC সংগ্রহ করুন। ইমিগ্রেশনে আপনাকে এটা দেখাতে হবে এবং একটা কপি দিতে হবে।
  • অনলাইনে https://indianvisa-bangladesh.nic.in/visa এই সাইটে গিয়ে ভিসা এপ্লিকেশন পূরণ করুন। ভিসা টাইপ হবে পেশেন্টের জন্য মেডিকেল এবং এটেন্ডারের জন্য মেডিকেল এটন্ডার।
  • এপ্লিকেশন ফর্ম পূরণের সময় আপনি রেফারেন্স আর ভিসার মেয়াদ আর থাকার জায়গা নিয়ে আটকাতে পারেন। রেফারেন্সে ইন্ডিয়ান ব্যক্তির জায়গায় আপনার এপয়মেন্ট লেটার যিনি স্বাক্ষর করেছেন তার নাম, মোবইল নম্বার দিন আর দেশের রেফারেন্সে আপনার নিকটাত্মীয়র নাম দিন। কত দিনের জন্য ভিসা চান, সেখানে ১২ মাস এবং মাল্টিপল এন্ট্রি উল্লেখ করুন। ভিসা কত দিনের দিবে সেটা ওদের ব্যাপার। ছবি আগে থেকেই স্ক্যান করে নিন। ভিসা ফর্ম পূরণ করার শুরুতে আপনাকে একটা রেফারেন্স আইডি দিবে, ওটা লিখে রাখুন। ওটা দিয়ে আপনি অর্ধেক ফিলাপ করা ফর্ম পরে কমপ্লিট করতে পারবেন।
  • থাকার জায়গায় আপনি যে হোটেলে থাকবেন তার ঠিকানা মোবাইল নাম্বার দিবেন। ওখানকার কয়েকটা হোটেলের কার্ড দিলাম, আপনার সুবিধার জন্য, তবে ভিসা এপ্লিকেশনে দেয়া ঠিকানার হোটেলে যে আপনাকে থাকতেই হবে এমন কোনো বাধ্যবধকতা নাই।
  • ফিলাপ করা ফর্ম প্রিন্ট নিয়ে ফর্মে ২”x২” সাইজের ফটো আঠা দিয়ে লাগিয়ে নিন। ইউক্যাশের মাধ্যমে ৮৪০ টাকা জমা দিয়ে সময় থাকলে ঐদিনই এপ্লিকেশন জমা দিতে পারবেন। বলে রাখা ভালো, বেলা ২টার পর ভিসা সেন্টারে ঢুকতে দেয় না।
  • ভিসা এপ্লিকেশনের সাথে কী কী ডকুমেন্টস্ জমা দিতে হবে, তার ডিটেইলস্ পাবেন এই লিংকে
  • আপনার ভিসা কী কী কারণে রিফিউজ হতে পারে, তার ডিটেইলস্ পাবেন এই লিংকে। ( https://www.ivacbd.com/For-Bangladeshi–1339649634?ln=en )
  • এটেন্ডার আপনার রক্তের সম্পর্কের কেউ না হলে, কেন তাকে নিতে চান, সেটা জানিয়ে সাথে একটা এপ্লিকেশন দিন। আপনার পাসপোর্ট এপ্লিকেশন আপনার এটেন্ডার জমা দিতে পারবে।
  • আপনার এপ্লিকেশন জমা দেয়া হলে একটা টোকেন দিবে, যেখানে পাসপোর্ট ফেরত দেয়ার তারিখ থাকবে। ঐদিন টোকেন নিয়ে গিয়ে আপনি পাসপোর্ট  ফেরত পাবেন, ভিসা সহ বা ভিসা বিহীন। আপনি আপনার  এটেন্ডারের পাসপোর্ট নিতে পারবেন অথবা আপনার এটেন্ডার আপনার।
  • আপনার ভিসা যদি রিফিউজ হয়, তাহলে কেন রিফিউজ হয়েছে, তা তারা আপনাকে বলবে না, ওদের কাছে মেইল করলে ওরা উত্তরে শুধু আমি যে লিংক দুইটা দিছি, তা-ই দিয়া দিবে। বেটার আপনি অভিজ্ঞ কারো পরামর্শ নিয়ে আবার এপ্লাই করুন। শুনেছি বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ওরা ভিসা দেয়া সীমিত করে ফেলেছে।
  • ভিসা পাওয়ার পর আপনি যত দ্রুত সম্ভব টিকিট করে ফেলবেন, কারণ যত আগে টিকিট কাটবেন,  তত কম ফেয়ার পাবেন। যার কাছ থেকে টিকিট নিবেন তাকে এয়ার সুবিধা করে দেয়ার শর্ত রাখবেন, আপনার সুবিধা হবে।  ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনি পারলে নিজেও করে নিতে পারবেন। তবে এয়ার সুবিধা করার জন্য আপনার কোভিড নেভেটিভ সনদ এবং আপনার হোটেলের ঠিকানা লাগবে। (https://www.newdelhiairport.in/airsuvidha/apho-registration)
  • এরপর করোনা টেস্ট। আপনার ফ্লাইট যদি ৫ তারিখ সকালে হয়, তাহলে আপনি ৩ তারিখ সকালের মধ্যে স্যাম্পল দিয়ে আসবেন। বিদেশগামীদের জন্য সরকারি কোভিড টেস্টের জন্য ঠিকানা: মহাখালী ডিএনসিসি বিল্ডিং, (মহাখালী বাস স্ট্যান্ডের সাথে) ঢাকা। এটা সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত এবং ভালো ব্যবস্থাপনা। আপনার এয়ার টিকেট, পাসপোর্ট, ভিসার দই কপি করে ফটোকপি লাগবে, অবশ্যই সাথে করে নিয়ে যাবেন এবং একটি কলম। ফর্ম ফিলাপ করে লাইনে দাড়িয়ে ১৫১৫ টাকা জমা দিয়ে স্যাম্পল দিয়ে আসবেন।
  • ২৪ ঘন্টা অথবা তার আগেই রিপোর্টের এসএমএস আপনার মোবাইলে চলে আসবে। তখন (https://covid19reports.dghs.gov.bd) ওয়েবসাইট থেকে ৪/৫ কপি প্রিন্ট বের করে নিবেন, ফটোকপিও করতে পারেন। একটি সফটকপি আপনার ট্রাভেল এজেন্সিকে (যেখান থেকে টিকিট করেছেন) মেইল বা হোয়াটসএপ করে দিবেন, এয়ার সুবিধা করে আপনার কাছে মেইল বা হোয়াটসএপ করে দেয়ার জন্য। এটা হয়ে গেলে আপনি বিমানে উঠার জন্য তৈরি।
  • ফ্লাইট টাইমের কমপক্ষে ২ ঘন্টা পূর্বে এয়ারপোর্টে পৌছে যাবেন। এয়ার সুবিধা এবং কোভিড সার্টিফিকেটের প্রতিটির ৩/৪ কপি ফটোকপি, কলম, শুকনা খাবার (স্যান্ডউইচ, বিস্কিট, ফল কারণ এয়ারপোর্টে খাবারের দাম অনেক বেশি) সাথে করে নিয়ে যাবেন। এন্ট্রিতেই আপনার কোভিড সার্টিফিকেট চেক করে, সিল দিয়ে দিবে, যা পরে আপনাকে ইমিগ্রেশনে জমা দিতে হবে।
  • তারপর আপনি যাবেন যে বিমান সংস্থার টিকিট কেটেছেন তাদের বুথে, ওরা আপনার পাসপোর্ট ভিসা, কোভিড সার্টিফিকেট, এয়ার সুবিধা চেক করে লাগেজ জমা নিয়ে আপনাকে বোর্ডিং পাস দিয়ে দিবে। বোর্ডিং পাসে কোন গেট দিয়ে আপনাকে এন্ট্রি করতে হবে তা লেখা থাকবে।
  • তারপর যাবেন ইমিগ্রেশনে, ওখানে আপনার সকল ডকুমেন্টস্ চেক করে, ডিপার্চার সিল দিয়ে দিবে। এখন আপনার ফ্লাইট নাম্বার এনাউন্সের জন্য অপেক্ষা করবেন। ফ্লাইট নাম্বার এনাউন্স হলে ঘোষিত গেট দিয়ে সিকিউরিটি চেক-আপ শেষে একটা রুমে অপেক্ষা করবেন বিমানে বোডিং করার জন্য। আপনার বাংলাদেশ পর্ব এখানে শেষ।

আপনি একবার ভারত পৌছে গেলে সেখানে অনেক মানুষের সাহায্য  পাবেন, অভিজ্ঞ দেশি মানুষও পাবেন। তাই এ পর্বে আমার অভিজ্ঞতা থেকে কিছু তথ্য দিবো যা আপনার ভ্রমণ ও চিকিৎসা প্রক্রিয়াকে একটু সহজতর করতে পারে মাত্র।

এআইজি গাচ্ছিবলি পৌছানো

বাংলাদেশ থেকে সরাসরি হায়দ্রাবাদ পৌছানোর কেনো ফ্লাইট নাই, আপনাকে কলকাতা, দিল্লি, চেন্নাই থেকে কানেক্টিং ফ্লাইট ধরতে হবে। আমার কানেক্টিং ফ্লাইট ছিল দিল্লি থেকে, তাই দিল্লি এয়ারপোর্ট বিষয়ক কিছু অভিজ্ঞতা বলবো। আপনি ল্যান্ড করবেন ইন্টারন্যাশনাল টার্মিনালে, ইমিগ্রেশন শেষে আপনাকে কানেক্টিং ফ্লাইট ধরতে ডমিস্টিক টার্মিনালে যেতে হবে। যদি আপনার বোডিং পাসে লাগেজ কালেক্ট করার কথা থাকে, তাহলে লাগেজ কালেক্ট করে ইন্টারন্যাশনাল টার্মিনাল থেকে বের হয়ে ডমিস্টিক টার্মিনালে চলে যাবেন, আগে ভেতর দিয়ে যাওয়ার রাস্তা ছিল এখন তা করোনার জন্য বন্ধ। একটা গুরুত্ত্বপূর্ণ  বিষয় এখানে বলে রাখি, আপনার ট্রানজিট টাইম যদি বেশি হয়, তাহলে আপনাকে কিন্তু একটা নির্দিষ্ট সময়ের আগে আপনাকে ডমিষ্টিক টার্মিনালে ঢুকতে দেবে না, আর একবার বের হয়ে গেলে আবার ইন্টারন্যাশনালে ফিরেও যেতে পারবেন না, বিষয়টা যদি রাতে ঘটে, তাহলে বিশাল ভোগান্তিতে পরবেন, আপনাকে রাস্তায় বসে থাকতে হবে। উদাহরণ দেই, ধরেন আপনি রাত ৮টায় ল্যান্ড করছেন আর আপনার কানেক্টিং ফ্লাইট ভোর ৬টায়, মানে ১০ঘন্টার ট্রানজিট, সেক্ষেত্রে আপনাকে রাত ১২টার আগে ডমিস্টিকে ঢুকতে দিবে না, কারণ হিসেবে ওদের যুক্তি আপনার ফ্লাইট পরদিন। তাই পরার্মশ হলো, ট্রানজিট সময় বেশি থাকলে আপনি ইন্টারন্যাশনাল টার্মিনালে অপেক্ষা করবেন।

এয়ারপোর্টে ফ্রি ওয়াই-ফাই আছে, তবে তা ইউজ করতে আপনার ইন্ডিয়ান মোবাইল নম্বর প্রয়োজন হবে, তবে এর বিকল্প আছে। আপনি জিএমআর (এয়ারপোর্ট পরিচালনা সংস্থা) এর হেল্প ডেস্ক থেকে ওয়াই-ফাই কুপন সংগ্রহ করে ইন্টারনেট ইউজ করতে পারবেন, একটা কুপন দিয়ে ২ঘন্টা, শেষ হয়ে গেলে আর একটা নিতে পারবেন সমস্যা নাই। 

হায়দ্রাবাদ পৌছানোর পর ট্যাক্সিতে এআইজি গাচ্ছিবলি নিবে ৭০০-৮০০ রুপি, রাত বেশি হয়ে গেলে ১২০০ রুপিও নিতে পারে। তবে আপনি দিনে পৌছে গেলে বাসেও যেতে পারেন, ভাড়া জনপ্রতি ২১০ রুপি। এয়াপোর্ট থেকে বের হয়ে ডান দিকে কিছুদূর গেলেই বাস স্টেশন। বাসে গেলে কিভাবে এইআইজি পৌঁছাবেন তার ডিটেইলস দিয়ে দিচ্ছি। বাসে উঠে আপনি ড্রাইভারকে বলবেন আপনি গাচ্ছিবলি হাইটেক সিটিতে যাবেন আর আপনাকে যেন IKEA বিল্ডিং এর সামনে নামিয়ে দেয়া হয়। বাস গাচ্ছিবলি পার হলেই আপনি এলার্ট হয়ে যাবেন, IKEA বিল্ডিং দূর দেখেই দেখা যাবে, IKEA বিল্ডিং এর শেষপ্রান্তে IKEA এর একটা বড় ত্রিকোণাকৃতির বিলবোর্ড আছে সেটার সামনে নামবেন, ছবি দেয়া আছে। এখানে একটা  চৌরাস্তার মোড় আছে, আপনি মোড় থেকে  IKEA বিল্ডিং ঘেষে বাম দিকে হাটতে থাকবেন Deloitte বিল্ডিংকে চোখের সামনে রেখে। Deloitte বিল্ডিং পার হলেই এআইজি হাসপাতাল দেখতে পাবেন। এআইজি হাসপাতাল ঘেষে পিছনের রাস্তাটা হোটেলে যাওয়ার রাস্তা। রাস্তাটার নাম ‘Babu Khan Lane’। আপনি যদি সকাল সকাল পৌছে যান তাহলে হাসপাতালের ফর্মালিটি শেষ করে হোটেলে উঠতে পারেন, যেমন রেজিষ্ট্রেশন, এপয়মেন্ট ফি দিয়ে ঐদিনই ডাক্তার দেখানো ইত্যাদি। হাসপাতালে আপনাকে যেতে হবে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কে, এন্ট্রি দিয়ে ঢুকেই ডানদিকে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, ওখানে তিনজন পাবেন যারা বাংলা বলে, বাংলাদেশিও পেয়ে যেতে পারেন। সুতরাং গিয়েই বাংলা বলা শুরু করতে পারেন, সমস্যা হবে না।

আরো কিছু দরকারি তথ্য

  • যেহেতু দুই দেশের ভাষাগত পার্থক্য আছে তাই আপনার শারীরিক সমস্যা গুলো একটা কাগজে ইংরেজিতে লিখে নিয়ে যাবেন, এইটা আপনার কাজ অনেক সহজ করে দেবে। দেশে করা সকল রিপোর্ট ফিল্মসহ নিয়ে যাবেন।
  • সকল প্রকার টেস্ট ফি, ডাক্তার এপয়েন্টমেন্ট ফি ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কে জমা দিবেন, নাইলে আপনাকে বিশাল লাইন ধরে ফি জমা দিতে হবে।
  • ২য় বার ডাক্তার কনসাল্টেশেনের আগে কোনো টাকা না লাগলেও একটা জিরো রিসিপ্ট কাটতে হয়, ডাক্তার দেখানোর আগে সেটা ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক থেকে কেটে নিয়ে যাবেন, নাইলে বিশাল এক লাইন ধরে ফাইল জমা দিতে গিয়ে আবার রিসিপ্ট কাটার জন্য আপনাকে ফেরত আসতে হবে।
  • হাসপাতালটি বিভিন্ন ক্লাস্টারে ভাগ করা বিভিন্ন ক্লাস্টারে বিভিন্ন কাজ হয়, গ্যাস্ট্রো’র ডাক্তাররা ক্লাস্টার আইতে বসেন। ক্লাস্টার এফ এ ব্লাড টেস্ট, বেজমেন্টে তিনে সিটিস্ক্যান/এমআরআই করা হয়। বেজমেন্ট একে কোলোনোস্কপি প্রিপারেশন হয়।
  • আপনাকে যদি ডাক্তার  সিটিস্ক্যান/এমআরআই/এমআরসিপি টেস্ট দেয়, তাহলে বেজমেন্টে তিনে গিয়ে আগে এপয়েমেন্ট টাইম (সিরিয়াল) নিয়ে আসবেন তারপর রিসিপ্ট কাটবেন।  সিটিস্ক্যান/এমআরআই/এমআরসিপি টেস্টে সময় নিয়ে যাবেন, পুরো হাসপাতালের মধ্যে এই ডিপার্টমেন্টটা বিশৃঙ্খল, কারণ একটু পর পর ইমার্জেন্সি রোগিরা আসবে, আর আপনার সিরিয়াল পিছিয়ে যাবে।
  • হাসপাতালের পিছনে কয়েকটি বাঙ্গালি মালিকাধীন হোটেল আছে, যেমন, নিমন্ত্রণ, বেস্ট ইস্টার্ন, আর সব হোটেলেই আপনি বাঙ্গালি স্টাফ পাবেন। আমি অক্ষয় হোটেলে ছিলাম। হোটেল ভাড়া রুম ভেদে ৭০০-২০০০ রুপি পর্যন্ত। একটু ভেতরে গেলে অবশ্য আরো কমে পেতে পারেন।
  • ওখানে বাঙ্গালী রেস্তোরা প্রচুর, তাই খাওয়া দাওয়ার সমস্যায় পড়বেন না। যদি রেকমেন্ডেশেন চান, তাহলে হোটেল বেস্ট ইস্টার্ন এর নীচতলায় সোনার বাংলা রেস্ট্রুরেন্টের কথা বলবো, কম টাকায় ভালো বাঙ্গালী খাবার পাওয়া যায়।
  • মোবাইল সিম নিতে চাইলে হোটেলের রাস্তার শেষ প্রান্তে গিয়ে একটু বামে একটা দোকান পাবেন সেখান থেকে নিতে পারবেন, ছবি লাগবে না তবে পাসপোর্ট  সাথে নিয়ে যাবেন। দোকানের কার্ড ছবিতে দেয়া আছে।
  • কোথায় গেলে উবার ইউজ করতে পারেন। উবারের মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে ইন্ডিয়ান নাম্বার সেট করে নিয়েন। ওখানে উবার অটো সার্ভিস আছে, ভাড়া রিজনেবল। নরমালি অটোওয়ালারা উবারের ডাবল ভাড়া চায়। তবে ভালো হিন্দি না জানলে ভাষাগত সমস্যা হতে পারে। হায়দ্রাবাদের লোকাল ভাষা তেলেগু।
  • ডলার হাসপাতাল থেকে না ভাঙ্গিয়ে হোটেলের কাছাকাছি একটা মানি এক্সচেঞ্চ আছে সেখান থেকে ভাঙ্গাবেন, রেট একটু বেশি পাবেন।
  • দেশে  ফেরার টিকিট দেশ থেকেই কাটার করার চেষ্টা করবেন, ওখান থেকে কাটলে বেশি টাকা লাগবে।
  • ওষুধ পারতপক্ষে হাসপাতালের ফার্মেসি থেকে কিনবেন না, কারণ ওখানে কোনো ডিসকাউন্ট নাই। বাইরের ফার্মেসিতে ২০% ডিসকাউন্ট দেয়!
  • এআইজি হাসপাতালে সংখ্যায় বেশিরভাগ রোগী প্যানক্রিয়াটাইটিসের, ওখানে প্রতিদিন অন্তত ২০/৩০ জন রোগীর প্যানক্রিয়াটিক স্ট্যান্টিং করা হয়। তারপর আসে অন্যান্য রোগী যেমন গলব্লাডার স্টোন, গ্যাস্ট্রিক আলসার, লিভার প্রবলেম ইত্যাদি, পেটের পীড়া এককথায়।
  • হায়দ্রাবাদ ভারতের তেলেঙ্গানা স্টেটের একটি শহর। তেলেঙ্গানায় প্রবেশ করতে বা করার পর আপনার তামিলনাড়ু স্টেটের (চেন্নাই, ভেলোর) মতো TN-Pass এবং FRRO করার প্রয়োজন নাই। হায়দ্রাবাদ পৌঁছে আপনি সরাসরি আপনার চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করে দিতে পারবেন নিশ্চিন্তে।

কিছু সাধারণ কথা

এআইজি তে আউটস্টেট মানে তেলেঙ্গানার বাইরের ৯০% রোগী পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা এইসব অঞ্চল থেকে আসে, আর বিদেশির মধ্যে বাংলাদেশী। হাসপাতালে দেখতাম আশেপাশের প্রায় সবাই বাংলা বা বাংলার মতো করে কথা বলে। এই রিজিওন গুলোর খাদ্যাভাসই এর জন্য দায়ী, দক্ষিণ ভারতীয়রা পেটের পীড়ায় খুব কম আক্রান্ত হয়।

সময় আর স্বাস্থ্য ভালো থাকলে হায়দ্রাবাদের কিছু পর্যটন স্পট ঘুরে আসতে পারেন, যেমন, হোসাইন সাগর, চারমিনার, গোলকোন্ডা, জহরলাল নেহেরু পার্ক ইত্যাদি। খেয়ে আসতে পারেন বিখ্যাত হায়দ্রাবাদি দম  বিরিয়ানিও, কিছু বিখ্যাত রেস্তোরা হলো, শাদাব, শাহ-গাউস, প্যারাডাইজ বিরিয়ানি ইত্যাদি।

ইন্ডিয়ান ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে?

ভারতের ভিসা পেতে সাধারনত এক সপ্তাহ সময় লেগে থাকে। ভিসার আবেদন জমা দেয়ার পর সাধারণত এক সপ্তাহ পর পাসপোর্ট ফেরত দেয়। পাসপোর্ট ফেরত দেয়ার আগে SMS পাবেন। সেই তারিখে ভিসা সেন্টারে যেয়ে হাজির হয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে। এসএমএস ছাড়া গেলে পাসপোর্ট দিবে না। অনেক সময় এই সময় আরও বেশি লাগতে পারে।

ইন্ডিয়ান ভিসা সেন্টার এর সাপ্তাহিক বন্ধ কোন কোন দিন?

ভারতের ভিসা সেন্টার সাধারণত প্রতি সপ্তাহের শুক্র এবং শনিবার বন্ধ থাকে। এছাড়া বাংলাদেশের সরকারি ছুটি ও ভারতের বিশেষ জাতীয় দিবসেও বন্ধ থাকে।

Leave a Comment
Share