হাজীগঞ্জ কেল্লা (Hajiganj Fort) এটি একটি ঐতিহাসিক দূর্গ যা নারায়ণগঞ্জ জেলা সদরে হাজীগঞ্জের কিল্লাপুর নামক স্থানে অবস্থিত। হাজীগঞ্জ কেল্লা বাংলার বার ভূইয়াদের অন্যতম ঈশা খাঁ এর কেল্লা হিসেবে পরিচিত। হাজীগঞ্জ দুর্গ মুঘল আমলে নির্মিত একটি জল দুর্গ যা শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত। এটি খিজিরপুর দুর্গ নামেও পরিচিত। ১৬৫০ সালের দিকে মোঘল আমলে, যখন মীর জুমলা বাংলার সুবাদার ছিলেন তৎকালীন সময়ে সমৃদ্ধ শহর ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকাকে নদী পথে আগত মগ ও পর্তুগিজ শত্রুদের আক্রমণ প্রতিহত করতে ও জলদস্যুদের আক্রমণ থেকে রক্ষ্যা করার জন্য নদীর তীরে ৩টি দূর্গ তৈরি করা হয়। যাদেরকে ত্রিভূজ জল দুর্গ বা ট্রায়াঙ্গল অব ওয়াটার ফোর্ট বলা হতো, তারই একটি হলো এই হাজীগঞ্জ দুর্গ। অন্যটি শীতলক্ষ্যার পূর্ব পাড়ে সোনাকান্দা দূর্গ এবং অন্যটি মুন্সীগঞ্জের ইদ্রাকপুর দূর্গ।
দূর্গের চারদিকে বিশাল দেয়ালের বেষ্টনী, প্রবেশ দারে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয়। একপাশে কালের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে ওয়াচ টাওয়ার। বেস্টনীর সাইড দিয়ে ওয়াক ওয়ে, দেয়ালে তিন ছিদ্র বিশিষ্ট অস্ত্র চালানোর গর্ত। কেল্লার ভেতরে এখন পুরোটাই ফাকা শুধু কিছু গাছপালা দাঁড়িয়ে আছে, আর আছে বিশাল সবুজ মাঠ। বর্তমান নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অফিসের পাশেই এর অবস্থান এবং বিপরীত দিকে গুদারাঘাটের অবস্থান। চাইলে ঘাট দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে ছাউনী ওয়ালা নৌকা নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন, এছাড়া ওপারে আছে কদম রসূল মাজার।
ঢাকা এর গুলিস্তান থেকে নারায়ণগঞ্জগামী উৎসব/বন্ধন/হিমাচল/শীতল বাসে করে সোজা চাষাড়া। ভাড়া ৩৬ টাকা (এসি বাস ভাড়া ৫৫ টাকা)। সেখান থেকে একটু সামনে এসে অটো স্ট্যান্ড থেকে ৫ টাকা দিয়ে নবিগঞ্জ ৫ নং ঘাট/হাজিগঞ্জ কেল্লা।
ট্রেনে যেতে চাইলে কমলাপুর এর নারায়ণগঞ্জ শহরতলী প্লাটফর্ম থেকে ট্রেনে করে চাষাড়া স্টেশন। ভাড়া ১৫ টাকা। চাষাড়া থেকে রিকশা হাজীগঞ্জ ফায়ার স্টেশন/নবীগঞ্জ ঘাট/কেল্লার কথা বললে নামিয়ে দিবে। হাজিগঞ্জ দূর্গ দেখে ৫ নং খেয়াঘাট পার হয়ে ৫ টাকা জন প্রতি। তারপরে অটোরিক্সা রিজার্ভ নিয়ে চলে জেতে পারেন সোনাকান্দা দুর্গে। অথবা ১০ টাকা জন প্রতি দিয়ে ১ নং খেয়াঘাট, সেখান থেকে জন প্রতি ১০ টাকা দিয়ে অটোরিক্সা নিয়ে সোজা সোনাকান্দা কেল্লা। অটোরিক্সা রিজার্ভ ৪০ টাকা।
ঢাকার খুব কাছে হোয়ার কারনে এক দিনের মধ্যেই হাজীগঞ্জ কেল্লা ঘুরে আসতে পারেন। সে ক্ষেত্রে রাতে থাকার জন্যে আপনার কোন চিন্তা করতে হবে না। তবে যারা দূর থেকে যাবেন তাদের জন্য নারায়ণগঞ্জ সদরে থাকার বেশ ভালো ব্যবস্থা আছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো – হোটেল মেহরান, হোটেল সোনালি, হোটেল নারায়ণগঞ্জ, হোটেল সুগন্ধা, হোটেল সুরমা ও হোটেল রুপায়ন ইত্যাদি।
সোনারগাঁ লোক শিল্প জাদুঘর, পানাম নগর, সোনারগাঁ তাজমহল, জিন্দা পার্ক, বারদীর লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রম, মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি, সুবর্ণ গ্রাম পার্ক রিসোর্ট, বন্দরপাড়া মসজিদ, সোনাকান্দা কেল্লা, গোয়ালপাড়া হুসেন শহার মসজিদ, কিল্লারপুলে বিবি মরিয়মের মাজার প্রভৃতি।
Leave a Comment