নারায়ণগঞ্জ

বিশনন্দী ঘাট

বিশনন্দী ঘাট (Bishnandi Ferry Ghat) বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় স্থান গুলোর মধ্যে একটি। মিনি কক্সবাজার নামে পরিচিতি পাওয়া বিশনন্দী ঘাট এর অবস্থান বেশি দুরে নয়, ঢাকার খুব কাছেই। ঢাকা থেকে এই ঘাটের দুরত্ব মাত্র ৪৩ কিলোমিটার। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় বিশনন্দী ঘাট এর অবস্থান। একদিকে মেঘনা নদীর বিশাল জলরাশি আর অপরদিকে তীরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বালুময় প্রান্তর। আড়াইহাজার উপজেলার বিশনন্দি ইউনিয়নের অর্ন্তগত এই ফেরিঘাট এলাকাটিই বিগত কয়েক বছরে মিনি কক্সবাজার হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। বিভিন্ন ছুটির দিনগুলোতে ভ্রমণ পিপাসু মানুষ ছুটে এখানে ভীড় করে থাকে।

বিশনন্দী ঘাটে গেলে দেখা যায় একদিকে বিশাল জলরাশি বুকে নিয়ে বয়ে চলেছে খরস্রোতে মেঘনা নদী এবং তাঁর অন্যপাশে রয়েছে বিস্তীর্ন সমতল ভূমি। পাড়ের রাশি রাশি বালু কনা সারাক্ষন ভ্রমণ পিপাসু মানুষকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। দুপুরের দিকে ফেরীঘাট এলাকায় ভিড় কম থাকলেও বেলা পরার সাথে সাথে ভিড় বাড়তে থাকে। বিশনন্দী ঘাট থেকে নেমে নদী ধরে আগালেই অনেক জলচর পাখির দেখা মিলবে। নদীতে দেখা যায় পালতোলা নৌকা। নদীর মাছ ধরার নৌকা গুলোর মাছ ধরার দৃশ্য তো আরও অপরূপ। নদীর পারে কৃষি জমি। কোথাও কোথাও নদী আর ধানক্ষেত যেন জড়াজড়ি করে আছে। বেলা কমে আসার সাথে সাথে নদীর পানিতে ফুটে ওঠে গোধূলির রং। পর্যটকদের আগ্রহের কারনে বিশনন্দী ফেরিঘাটে এখন বেশ কয়েকটি দোকান হয়েছে। চাইলে ঘোরাঘুরির ফাঁকে হালকা কিছু খেয়েও নিতে পারবেন।

এখানে ফেরি ছাড়াও ইচ্ছা করলে নৌকা ভাড়া করে ঘুরতে যাওয়া যায়। এছাড়া ঘাটে স্পিডবোটও রয়েছে। মাঝেমধ্যে মাছ নিয়ে হাজির হয় জেলে নৌকারা। চাইলে টাটকা মাছ কিনেও ফিরতে পারেন নীড়ে। এখানের চিরচেনা মানিকপুর গ্রামটিই ক্রমে ক্রমে ‘মিনি কক্সবাজার’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করছে।

শহরের যান্ত্রিকতা থেকে নিজেকে ছুটি দিতে চাইলে ছুটির দিনে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন বিশনন্দি ফেরি ঘাট থেকে। পরিবার নিয়ে ডে ট্রিপের জন্যে মন্দ হবে না।

বিশনন্দী ঘাট যাওয়ার উপায়

ঢাকার জিরো পয়েন্ট থেকে আড়াইহাজার উপজেলার বিশনন্দী ফেরিঘাটের দুরত্ব প্রায় ৪৩ কিলোমিটার। খুব কাছে হওয়ার দরুন ঢাকা থেকে দিনে দিনেই ঘুরে আসা যায়। আর ঢাকা থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থাও আছে অনেক ধরনের। নিচে সম্ভাব্য কিছু রুটের বিস্তারুইত তুলে ধরা হলো –

রুট – ১ঃ সায়েদাবাদ থেকে অভিলাস পরিবহনে সরাসরি মানিকপুর পৌঁছানো যায়। তারপর রিক্সা করে বিশনন্দী ফেরিঘাটে পৌছানো যাবে।

রুট – ২ঃ এছাড়া নারায়ণগঞ্জ থেকে সড়কপথে কাচঁপুর ব্রীজ হয়ে মদনপুর চৌরাস্তা হয়ে ঢাকা-নরসিংদী রোডে সিএনজিযোগে সরাসরি বিশনন্দী ফেরিঘাটে পৌছা যায়।

রুট – ৩ঃ এছাড়া ঢাকা থেকে নরসিংদীর বাসে ভুলতা গাউছিয়া নেমে সিএনজি করে আড়াই হাজার বিশনন্দী ফেরিঘাট।

রুট – ৪ঃ ঢাকার কলাবাগান থেকে মেঘলা পরিবহনে গাউসিয়া/ভুলতা যেতে পারেন। ভাড়া ৬০ টাকা। এরপর সিএনজি করে আড়াইহাজার, ভাড়া ৩০ টাকা। আড়াইহাজার পৌছে পৌরসভার সামনে থেকে মানিকপুর বাজার ৩০ টাকা। এরপর রিক্সা করে পূর্ব পাড়া দিয়ে কলাপারা বালুর চর, বিশনন্দী।

রুট – ৫ঃ বর্তমানে ঢাকার কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বিশনন্দী ফে‌রিঘাট পর্যন্ত বিআরটি‌সি এ‌সি বাস সা‌র্ভিস চালু রয়েছে। আপনি যদি বাসে না যেতে চান তাহলে কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচ থেকে লোকাল প্রাইভেট কারে করে গাউসিয়া/ভুলতা চলে যান। খরচ পড়বে ৮০-১০০ টাকা।

Leave a Comment
Share