স্টোন ফরেস্ট

পাথরের বন হচ্ছে চীনের ইউনান প্রদেশের চির বসন্তের শহর কুনমিং থেকে ৮৫ কিলোমিটার দুরের সাইলন জেলার দিকে প্রকৃতির অপার বিস্ময়। স্টোন ফরেস্ট প্রকৃতির এক অদ্ভুত খেয়াল। চারিদিকে পাথরের অভূতপূর্ব সব কারুকার্য। চীনের ইউনান প্রদেশের এই পর্বতমালাটি হিমালয় পর্বতমালারই একটি অংশ। ছোট বড় উঁচু নিচু বিচিত্র পাথর দিগ্বিদিক এমনভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে যেন এক গভীর জঙ্গল , যে জঙ্গলে পাতায় ছাওয়া সবুজের পরিবর্তে বিশাল সব পাথুরে বৃক্ষ সদম্ভে দাঁড়িয়ে আছে। ২০০৭ সাল থেকে এই ফরেস্টের দুইটি অংশকে– ‘নাইগু স্টোন ফরেস্ট’ (Naigu Stone Forest) এবং ‘সুজেগি ভিলেজ’ (Suogeyi Village) ইউনেস্কো ঘোষণা করেছে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে।

স্টোন ফরেস্টের (Stone Forest) আজকের এই অবস্থায় পৌছতে লেগেছিলো প্রায় ২৭০ মিলিয়ন বছর। শত শত বছর ধরে সাগরের তলদেশে জমা হচ্ছিল লাইমস্টোন। ভূ-তত্ত্ববিদদের মতে এই স্টোন ফরেস্ট কারস্ট টপোগ্রাফির (karst topography) এক নান্দনিক উদাহরণ। প্রকৃতির বিচিত্র খেয়ালে কোন এক সময় হয়তো এখানে বয়ে গিয়েছিল বড়সড় কোনো ভূমিকম্প, কিংবা রহস্যময় কোনো কারণে অত্র অঞ্চলে ঘটে এক অভাবনীয় ভৌগোলিক পরিবর্তন, সাগরের তলদেশের পানি শুকিয়ে যেতে থাকে আর সাগরের তলদেশ থেকে বেরিয়ে আসে লক্ষ বছরের পুরনো বৈচিত্রময় লাইমস্টোনের পাহাড়। পাহাড়গুলো আজো তার বুকের মধ্যে ধারণ করে আছে নানাবিধ সামুদ্রিক ফসিল।

প্রচলিত লোককাহিনী অনুসারে, প্রেমিককে বিয়ে করতে চেয়েছিল উই আদিবাসী এক মেয়ে। কিন্তু সমাজের বাধার মুখে প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি ভালোবাসার দাবি। শোকে জমে পরে পাথর হয়ে যায় আশিমা। মাথায় স্কার্ফ এবং হাতে ঝুড়ি নিয়ে ঘুরতে থাকা মেয়ের মতো দেখতে এ পাথরটির সামনে প্রতিবছর নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উই আদিবাসীরা।

স্টোন ফরেস্টকে সাত নিম্নরূপ এলাকায় বিভক্ত করা হয় –

  • বৃহত্তর এবং হ্রাস স্টোন ফরেস্ট (大, 小 石林) – Lizijing স্টোন ফরেস্ট নামেও পরিচিত (李子菁 石林)
  • Naigu স্টোন ফরেস্ট (乃 古 石林)
  • Zhiyun গুহা (芝 云 洞)
  • লেক চ্যাং (长 湖 আক্ষরিক লং লেক)
  • লেক ইউ (月 湖 আক্ষরিক মুন লেক)
  • Dadie জলপ্রপাত (大 叠水)
  • Qifeng গুহা (奇峰 洞)

জলবায়ু

এখানকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ১৮ ডিগ্রী এবং সর্বনিম্ন মাইনাস ৩/৪ ডিগ্রী বিরাজ করে। এভারেজ তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রী।

কিভাবে যাবেন

প্রতিদিন চীনের কুনমিং থেকে ঢাকা পর্যন্ত ২ টা ফ্লাইট আছে। ইস্টার্ণ চায়না এয়ার লাইন্স এর ফ্লাইট কুনমিং থেকে ঢাকা ছেড়ে যায় প্রতিদিন স্থানীয় সময় সকাল দশটায়। চায়নার সাথে বাংলাদেশের সময়য়ের ব্যবধান দুই ঘন্টা। অর্থাৎ আমাদের দেশে যখন সকাল ১০ টা চায়নায় তখন বেলা ১২ টা। সদ্য চালু হওয়া চায়না সাউদার্ণ এয়ার লাইন্স এর ফ্লাইট ঢাকা-কুনমিং-গুয়াংজু প্রতি দিন একটা করে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। সেই ফ্লাইট টাইমও সকাল ৯ টার সময়।

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ chinaforestkunmingstone