সোনাংপেডেং

সোনাংপেডেং/শ্নোনেংপেডেং (Shnongpdeng), মেঘালয় রাজ্যের অন্তর্গত ডাউকির অসম্ভব সুন্দর একটি গ্রাম যা জৈন্তা হিলস জেলার অন্তর্গত। মেঘালয়ে উমাংগট এবং কেশর নদীর পাড়ে অবস্থিত স্বচ্ছ জলের দেশ সোনাংপেডেং গ্রাম। সোনাংপেডেং গ্রামটি শিলং থেকে ৯৫ কিলোমিটার এবং ডাউকি বর্ডার থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। পাশেই পাথুরে নদী উমংগট, যার পানির রং ঘন সবুজ আর স্বচ্ছ। দিনের বেলা পাথুরে নদীতে মাছ ধরে, স্নোরকেলিং/রাফটিং/কায়াকিং/বোটিং আর স্বচ্ছ পানিতে গোছল করে দিনটি খুব ভাল ভাবেই পার করে দিতে পারবেন। রাতে এখানেই করতে পারেন ফায়ারক্যাম্প আর বারবিকিউ। ২য় দিন আসে পাশের বেশ কিছু ঝর্নাও চাইলে দেখতে পারেন। করতে পারবেন ট্রেকিং, জিপলাইনিং আরও অনেক কিছুই।

স্নোনেংপেডেং বেড়াতে গেলে মনে আসবে প্রশান্তি। উমাংগট নদীটি ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে বদলে নেয়। এই নদীর স্বচ্ছ জল দেখলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন। নদী ভ্রমণের জন্য নৌকোর ব্যবস্থা আছে। নদীর ধারেই মিলে যাবে নৌকো এবং লাইফ জ্যাকেট। বোটিংয়ের জন্য নির্ধারিত সময় সকাল দশটা থেকে বিকেল চারটা। অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট পরতে হবে। কায়াকিং এর জন্যে কায়াক ভাড়া পাওয়া যায়। বোটে চেপে জলপ্রপাতের কাছাকাছি চলে যাওয়া যায়। বোটে উঠে দেখতে পাবেন এক অদ্ভুত দৃশ্য। দিনের বেলায় সূর্যের আলোয় হামেশাই দেখা যায়, নদীর জল অতি মাত্রায় স্বচ্ছ হওয়ার কারণে নৌকোটির ছায়া পড়ে নদীর গভীরে। দৃশ্যটি দেখার জন্যই এখানে প্রতিবছর হাজির হন হাজারো পর্যটক।

অনেক রাত পর্যন্ত এই পাহাড়ি নদীর পাথরগুলোতে বসে জল-পাথরের অপূর্ব সংগীত শুনতে পারেন। ভোরে ঘুম থেকে উঠে উমংগট নদীতে ঘুরাঘুরি করে কাছাকাছি ২ টি ঝুলন্ত ব্রিজে উঠে দেখে কটেজে ফিরে এসে সকালের নাস্তা খেতে পারেন। খুব স্বচ্ছ এই নদীর জল। পানিতে নৌকা চললে মনে হয় নৌকা হাওয়ায় ভাসছে। আর ব্রিজের উপর থেকে অনেকদূর পর্যন্ত নদীটি দেখা যায়। এই ব্রিজের নিচেই ২ টি নদী এসে মিলিত হয়ে এক ধারায় প্রবাহিত হয়েছে, এই মিলনস্থলটিও খুব সুন্দর।

এক্টিভিটিজ

সোনাগপেডেং এ জিপ লাইন এক্টিভিটিস আছে। খরচ পড়বে ৩০০ রুপী জনপ্রতি। তবে দামাদামি করলে কিছুটা কমানো সম্ভব। চাইলে স্কুবা ডাইভও করা যায়। এক্ষেত্রে খরচ ৩০০০ রুপি, সময় পাবেন ২৫-৩০ মিনিট।

নীচের ঘাট থেকে ৫০০ রুপি দিয়ে নৌকা রিজার্ভ করে ঘুরে আসুন নদীর উজান থেকে। সুউচ্চ সব সবুজ পাহাড়ের মাঝ দিয়ে স্বচ্ছ পানিতে ভেসে বেড়ান ২-৩ ঘন্টা। এক নৌকায় ৫ জন উঠা যায়। একটা ফলস পর্যন্ত নিয়ে যাবে এবং ফেরত নিয়ে আসবে। বোট যেখান থেকে ভাড়া নিবেন সেখান থেকেই বাধ্যতামুলক ভাবে লাইফ জ্যাকেট দিবে।

এছাড়া কায়াকিং, স্নোরকেলিং, ক্লিফ জাম্পিংও করা যায়। চাইলে নদীতে লাইফ জ্যাকেট পড়ে সাতার কাটতে পারবেন। ভাড়া ৩০ রুপি।

সম্ভাব্য খরচ

আপনি যদি বাজেট ট্রাভেলার হন এবং আপনার গ্রুপ যদি ৬ জনের হয় সেক্ষেত্রে একজনের সম্ভাব্য খরচ –

  • ঢাকা টু সিলেট – ২৮৫ টাকা ( ট্রেন)
  • সকালের নাস্তা – ৪০ টাকা
  • সিলেট টু তামাবিল – ১০০ টাকা
  • তামাবিল টু সোনেংপেডেং – ২৫০ টাকা
  • দুপুরের খাবার -১৫০ টাকা
  • কটেজ – ৩৫০ টাকা
  • রাতের খাবার – ১৫০ টাকা
  • সকালের নাস্তা – ৪০ টাকা
  • দুপুরের খাবার -১৫০ টাকা
  • তামাবিল টু সিলেট – ১০০ টাকা
  • রাতের খাবার – ১০০ টাকা
  • সিলেট টু ঢাকা – ২৮৫ টাকা ( ট্রেন)
  • অনান্য – ২০০ টাকা
  • সর্বমোটে – ২২০০ টাকা

ভিসা

ভিসা না থাকলে – ভিসা ফ্রি ৬০০ টাকা (যদি ই-টোকেন ফ্রি পান) + ভ্রমন ট্যাক্স ৫০০ টাকা।

কিভাবে যাবেন

বাংলাদেশ থেকে যেতে হলে তামাবিল-ডাউকি পোর্টের ভিসা নিতে হবে। ডাউকি থেকে ট্যাক্সি যোগে সোনাংপেডেং যাওয়া যায়।

কোথায় থাকবেন

সোনাংপেডেং থাকার জন্য রয়েছে দুই ধরনের ব্যবস্থা। কটেজে থাকলে ভাড়া পড়বে ১০০০ থেকে ১৫০০ রুপি। আর তাঁবুতে থাকলে ৭০০ রুপি। এছাড়াও এখানে হোম স্টে এর ব্যবস্থা আছে। Shatsngi Homestay and Adventure তে থাকতে পারেন। ফোনঃ +91 96120 89521 এছাড়া সোনেংপেডাং এ মানভার কটেজ এ থাকতে পারেন, ভাড়া ১০০০-১৫০০ রুপি, ফোন নাম্বার- +919615762788

ব্রাইট স্টার কটেজে ৪ জনের জন্য ২ বেডের এক রুম ভাড়া ১২০০-১৬০০ রুপি। চাইলে তাবুতেও থাকতে পারেন। ৪ জনের এক তাবুতে ম্যাটস, বালিশ, কম্বলসহ ৭০০ রুপি।

খাওয়া দাওয়া

সোনাংপেডেং এর কটেজে ভাত + সবজি + চিকেন/মাছ ১০০-১২০ রুপি। সকালের নাস্তা হিসেবে ২ পিস রুটি + চানা + চা এর জন্য ৩০ রুপি নিবে।

Leave a Comment
Share