মাওরিংখাং ব্যাম্বু ট্রেককে (Mawryngkhang Bamboo Trek) ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ট্রেক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মাওরিংখাং ট্রেকটি শিলং থেকে ৪৮ কিলোমিটার এবং চেরাপুঞ্জি থেকে ৫৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। মাওরিংখাং ট্রেককে ব্যাম্বু ট্রেক বলা হয় কারন এই পুরো ট্রেকটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার করতে হয়। মাওরিংখাং পৌঁছানোর জন্য আপনাকে যেতে হবে মেঘালয়ের পূর্ব খাসি জেলার ওয়াখেন গ্রামে। গ্রামে পৌঁছে বাকি পথ আপনাকে হেঁটেই অতিক্রম করতে হবে। অর্থাৎ এখান থেকেই শুরু ট্রেকিং রুট।
মেঘালয়ের এই ট্রেকিং রুট ভারত জুড়ে যে সব ট্রেকিং রুট রয়েছে তার থেকে একদম আলাদা। অবশ্যই আপনাকে পাহাড় পার করতে হবে। কিন্তু একটু অন্যভাবে। পাহাড়ের গা বেয়ে হাঁটার জন্য মৌরিংখাং ট্রেকিং রুটে রয়েছে পাথরের রাস্তা আর বাঁশের তৈরি ব্রিজ। প্রথমে নীচে নামার জন্য আপনাকে ধরতে হবে পাথরের তৈরি ওই সুন্দর রাস্তা। পথে আপনার কানে ভেসে আসতে পারে ঝর্নার শব্দ। আর নীচে নামলে দেখা মিলবে ওয়ারু নদীর।
পাথরের পথ শেষ হলেই দেখা মিলবে বাঁশের তৈরি ওই ঝুলন্ত ব্রিজের। এই ব্রিজের উপর ভরসা করেই আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে এক পাহাড় ডিঙিয়ে অন্য পাহাড়ে। এই রাস্তায় আপনার সঙ্গী হবে চারপাশের ঘন সবুজ। আর নীচ দিয়ে বইবে ওয়ারুর নীল জল। এই বাঁশের সেতু তৈরি করেছেন গ্রামের মানুষেরাই। পাহাড় ঘেঁষা এই সেতুই আপনাকে পৌঁছে নিয়ে যাবে মাওরিংখাং এর শেষ প্রান্তে।
৩ থেকে ৪ ঘণ্টা হাঁটার পর অবশেষে দেখা মিলবে মাওরিংখাং এর। একটি ত্রিভুজাকৃতির এক বিশাল পাথর। গ্রামের মানুষেরা মনে করেন, মাওরিংখাং হলেন একজন রাজা, যিনি প্রেমে পড়েছিলেন থিয়াং নামের একটি সুন্দরী পাথরের। নারীর মন জয় করতে যুদ্ধ শুরু হয় মৌরিংখাং ও মওপাথরের মধ্যে। বহু যুগের যুদ্ধের পর জয় লাভ করে মৌরিংখাং। সেই মৌরিংখাং এখন এখানে রয়েছে পাথর আকারে।
চোখ বন্ধ করে শীতকালে এই ট্রেকটি করার পরামর্শ দেওয়া হয়। কারন এই সময়ে ঘাস এবং বাঁশ শুকনো থাকে এবং পাথর পিচ্ছিল থাকে না। চাছাড়া শীতের আদ্রতা আপনাকে ততটা ঘামাবে না! বর্ষাকালে রাস্তা পিচ্ছিল থাকে যা এই ট্রেকের কাঠিন্যতা বাড়িয়ে দেয়।
এটি ৫ ঘন্টার কম হাইক (ওয়াহখেন-মাওরিংখাং-ওয়াহখেন)। সুতরাং, এটাতে হাইক করতে চাইলে অবশ্যই ভালো ফিটনেস থাকা জরুরি। মাওরিংখাং ট্রেকটি মধ্যম মানের ডিফিকাল্টি লেভেলের মনে হতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনি উচ্চতা নিয়ে ভয় পান। তাই আপনি যদি উচ্চতা নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করেন তবে আপনাকে অবশ্যই দ্বিতীয়বার ভাবতে হবে।
Leave a Comment