গাজীপুর জেলার রাজেন্দ্রপুরের ধলাদিয়া বাজারের খুব কাছেই সরল বাড়ি (Shorol Bari) এর অবস্থান। ঢাকার কাছাকাছি প্রকৃতির সান্নিধ্যে কোথাও থেকে ঘুরে আসার জন্য যথাযথ একটা জায়গা হতে পারে এই সরল বাড়ি। ঢাকা শহরের দূষিত জীবন থেকে কয়েকটা মুহুর্তের জন্যে মুক্তি চাইলে ডে ট্রিপেও (Day Trip) ঘুরে আসতে পারেন এখান থেকে। জনপ্রিয় শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী এবং যাত্রা, যাত্রাবিরতিসহ বেশ কিছু সফল উদ্যোগের উদ্যোক্তা আনুশেহ আনাদিল এর প্রপার্টি এটি। তিনি নিজের হাতে গড়ে তুলেছেন এই জায়গাটা। সবকিছু মিলিয়ে সরল বাড়ি যেন হয়ে উঠেছে প্রকৃতিবান্ধব সবুজে ঘেরা সরল চিত্রে।
সরল বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করতেই চারপাশের পরিবেশ আর গ্রামীণ প্রকৃতি দেখে মুগ্ধ হতে হবেই। সবুজ গাছগাছালি আর পাখিদের কলকাকলিতে মুখর পুরো জায়গাটা। এ যেন আবহমান গ্রাম বাংলার এক টুকরো প্রতিচ্ছবি।
সরল বাড়িতে রাতে থাকার জন্য আছে একটা দ্বিতল কাঠের বাড়ি আর একটা বাঁশের বাড়ি। কাঠের বাড়িটার নীচতলায় আছে বৈঠকঘর। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে ধারণ করে এমন নানা উপকরণ দিয়ে সাজানো হয়েছে বৈঠকঘরের অন্দরমহল। সামনেই টানা বারান্দা। বারান্দায় শোভা পাচ্ছে হরেক রকম সৌন্দর্য বর্ধনকারী বৃক্ষরাজি। বৈঠকখানার পাশ দিয়ে কাঠের সিঁড়ি বেয়ে বাড়িটার দোতলায় গেলে শোবার ঘর। এই বাড়িটায় সবমিলিয়ে ৪-৬ জন অনায়াসে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।
কাঠের দ্বিতল বাড়িটার একটু সামনে বাঁশের বাড়ির অবস্থান। বাঁশ আর বেতের সুনিপুণ বুননে গড়ে তোলা হয়েছে এই বাড়িটা। নীচতলাটা খোলামেলা। মেঝেতে বেশ কিছু আসন পাতা আছে। সামনেই সবুজ খোলা প্রান্তর। এই বাড়িটায় থাকার জন্য দুইটা রুম আছে। সেগুলো দোতলায় অবস্থিত। প্রতিটা রুমই খুব সুন্দর করে সাজানো গোছানো।
বাঁশের বাড়িটার পাশেই বিশ্রাম নেয়ার জন্য একটা বসার ছাউনি আছে। আর ঠিক পিছনটাতেই পুকুর যেখানে রয়েছে হাঁসরা সাঁতার কেটে বেড়ায়। পুকুরপাড়ে বাঁশ আর কাঠের সমন্বয়ে বানানো হয়েছে একটা ঘাট। ঘাটের পাশে আছে বেশ কয়েকটা দোলনা। সামনেই সবুজ মাঠ, ধান ক্ষেত আর নানারকম গাছগাছালি। পরিবেশটাই এমন যে মনে হবে এখানেই থেকে যাই কয়েকটা দিন।
সরল বাড়ির খাবারের ঘরটাও কাঠের তৈরি আর উপরে টিনের চাল। কাঠের বাড়ী এবং বাঁশের বাড়ীটায় যেমন নান্দনিকতার ছোঁয়ার দেখা মিলবে ঠিক তেমনি নান্দনিকতার বহিঃপ্রকাশ এখানেও বিদ্যামান। খাবারের আয়োজনে থাকতে পারে সাদা ভাত, বিভিন্ন রকমের ভর্তা, অর্গানিক উপায়ে চাষকরা শাক, বিভিন্নপদের তরকারি, মাছ কিংবা দেশী মুরগী, ডাল। খাবার পরিবেশন করা হয় মাটির পাত্রে। গ্রাম্য ভাইব বিদ্যমান রাখার জন্যে টিস্যু পেপারের বদলে দেয়া হয় গামছার ন্যাপকিন।
কন্টেন্ট ও ছবিঃ সোয়েব মাহমুদ
Leave a Comment