গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট (Gandhi Ashram Trust) নোয়াখালী জেলা সদর মাইজদি কোর্ট থেকে সোনাইমুড়ী উপজেলার জয়াগ বাজার সংলগ্ন রাস্তার প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। তৎকালীন জমিদার প্রয়াত ব্যারিস্টার হেমন্ত কুমার ঘোষের বাড়িতে এই গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টটি প্রতিষ্ঠা করে হয়েছিল। বর্তমানে গান্ধী আশ্রম নোয়াখালীর একটি সেবামূলক সংগঠন হিসেবে দেশব্যাপী খ্যাতি লাভ করেছে।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৪৬ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর মহাত্মা গান্ধী নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলা ভ্রমণ করেন এরং বর্তমান সোনাইমুড়ি পৌরসভার জয়াগ নামক স্থানে তিনি পরিদর্শনের জন্য গেলে সেখানকার তত্কালীন জমিদার ব্যরিস্টার হেমন্ত কুমার ঘোষ তার সকল সম্পত্তি গান্ধীজির আদর্শ প্রচার এবং গান্ধীজির স্মৃতি সংরক্ষণের একটি ট্রাস্ট এর মাধ্যমে জন্য দান করেন এবং গান্ধীজির নামে একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। ট্রাস্টটি প্রথমে আম্বিকা কালিগঙ্গা চ্যেরিটেবল ট্রাস্ট হিসেবে নিবন্ধনকৃত হলেও ১৯৭৫ সালে এটি নাম পরিবর্তিত হয়ে গান্ধি আশ্রম ট্রাস্টে পরিনত হয়। গান্ধি আশ্রমে গান্ধিজির নামে একটি জাদুঘরও আছে যাতে গান্ধিজির তখনকার নোয়াখালী সফরের একশতাধিক ছবি ও ব্যবহৃত জিনিসপত্র ও প্রকাশিত লেখা সংরক্ষিত আছে। বর্তমানে আশ্রমটি একটি ট্রাষ্ট হিসেবে পল্লি উন্নয়নের ব্রতে কাজ করে যাচ্ছে।
‘অহিংস’ সমাজ প্রতিষ্ঠায় গান্ধীর কর্মময় জীবনকে তুলে ধরতে মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিবিজড়িত বিভিন্ন দুর্লভ ছবি, বই ও জিনিসপত্র নিয়ে ২০০০ সালের ২ অক্টোবর গান্ধী আশ্রমের মূল ভবনে প্রতিষ্ঠা করা হয় গান্ধী স্মৃতি জাদুঘর। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিচারপ্রতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ এটি উদ্বোধন করেন। জাদুঘরে রতি গান্ধীর কর্মময় জীবনের কিছু কথা, কিছু ছবি, কিছু স্মৃতি যে কারো চিন্তার জগতকে নাড়া দেবে।কোনো ব্যক্তির স্মৃতি কিংবা ব্যক্তিজীবনের কর্মকান্ড নিয়ে এমন জাদঘুর সত্যিই বিরল।
জাদুঘরে প্রবেশ করতেই মহাত্মা গান্ধীর বিশাল আব মূর্তি সবার নজর কাড়ে। গান্ধীজির শৈশব থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের ১৩০টি ছবি শোভা পাচ্ছে এ জাদুঘরে।
প্রতি সপ্তাহের রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। এদিন ব্যতীত সপ্তাহের বাকি ৬ দিন (সোম থেকে শনিবার) গান্ধী স্মৃতি জাদুঘর সকল দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে।
ঢাকা ও নোয়াখালীর (Noakhali) মধ্যে চলাচল করা কয়েকটি বাস সম্পর্কে তথ্য আপনার সুবিধার্থে নিম্নে প্রদান করা হলো –
নোয়াখালী জেলা সদর মাইজদী হতে সোনাইমুড়ী গামী যেকোন লোকাল বাস সার্ভিস/ সিএনজি অটোরিক্সা যোগে সম্মুখে জয়াগ বাজার নেমে রিক্সা বা পায়ে হেঁটে আধা কিলোমিটার পুর্বে গেলে গান্ধী আশ্রমে পৌঁছানো যাবে।
নোয়াখালীতে ভালো থাকার জায়গা হলো – সার্কিট হাউস, রয়েল হোটেল, টাউন হল, হোটেল রাফসান, পুরাতন বাসষ্ট্যান্ডের হোটেল লিটন, হসপিটাল রোডে অবস্থিত নোয়াখালী গেষ্ট হাউস। ভাড়া অনেক কম। একটা মজার ব্যপার হলো এখানে প্রায় প্রতিটা হোটেলের নিচেই ভালো খাবার হোটেল আছে।
Leave a Comment