কুড়িগ্রাম

অচিন গাছ

একটি গাছের ঐতিহ্যকে বহন করে একটি এলাকার নাম সর্বত্র সু-পরিচিত হয়ে উঠেছে। এ এলাকাটি হচ্ছে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার অন্তর্গত চাকির পশার ইউনিয়নের জয়দেব হায়াত মৌজায় কালের সাক্ষী হয়ে ঝোঁপ-জঙ্গলের মাঝে মাথা উঁচু করে বিস্তীর্ণভাবে দাঁড়িয়ে আছে একটি বিশাল আকৃতির এ অচিন গাছ (Ochin Gach)। এলাকার লোকদের ভাষ্যমতে গাছটির বয়স কমপক্ষে ৫শ’ বছর হবে। বৃট্রিশ আমলে ‘অচিন গাছ’ হিসেবে গাছটির নাম করণ করা হয়েছে। এর আগে গাছটির শাখা-প্রশাখা বেশ বিস্তীর্ণ ছিল। পার্শ্ববর্তী বাড়িতে এক সময় ওই গাছের ডালপালার জন্য রোদ পাওয়া যেতো না। পার্শ্ববর্তীরা দূর-দূরান্তে ধান-পাট শুকাতো। কালের পরিবর্তে গাছটির বর্তমান শাখা-প্রশাখাগুলো আপনা-আপনি কমে এসেছে। বর্তমানে গাছটি প্রায় ১০ শতাংশ জমির আয়তন ঘিরে রয়েছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগে কখনও গাছটির ডাল ভেঙ্গে পড়ার কথা এলাকার লোকজন জানেন না। গাছটিতে পাইকোর গাছের ফলের মতো গোঁটা গোঁটা ফল ধরে এবং এসব ফল পশু-পাখি খায়। ওই গাছটি হতে লাখ লাখ ফল মাটিতে পড়লেও আজ পর্যন্ত ওই ফলের কোন গাছ জন্মায়নি। পূর্বে গাছটিতে বিশাল বিশাল আকৃতির বিষাক্ত শত শত সাপ বসবাস করতো। কিন্তু পার্শ্ববর্তী বাড়ির কোন মানুষের সাপগুলো কখনও কোন ক্ষতি করেননি। প্রতিদিন সন্ধ্যায় পার্শ্ববর্তী ও দূর-দূরান্তের সনাতন ধর্মের লোকজন মানত করে গাছটির গোঁড়ায় এসে পূজা-অর্চনা করে দান বাক্সে পূর্ণমনে দক্ষিণা দিয়ে দেন এবং দান বাক্সে লেখা রয়েছে গাছটির পাতা কেউ ছিড়বেন না। সনাতন ধর্মালম্বীরা গাছটি সংলগ্ন একটি মন্দির নির্মানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বলে সনাতন ধর্মের লোকজন জানিয়েছে। বর্তমানে গাছটির অযত্ন, অবহেলা আর রক্ষণা-বেক্ষণের অভাবে এর চারদিকে জঙ্গলে পরিপূর্ণ হয়েছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে এর একেকপাশের পাতার আকৃতিও একেক রকম।

এই গাছটির রহস্য মানুষের কাছে আজও রহস্যই রয়ে গেছে। অজানা এই বৃক্ষটির নাম মানুষের মুখে মুখে ‘অচিন গাছ’ হওয়ায় ওই এলাকাটির নামও ‘অচিন গাছ’ হিসেবেই পরিচিত লাভ করেছে শত শত বছর ধরে। এই গাছটি আর ২ জায়গায় দেখা যায় যার একটি গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার বাঁশতলী গ্রামে আরেকটি জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া এভিনিউতে।

কিভাবে যাওয়া যায়

ঢাকা থেকে সরাসরি কুড়িগ্রাম বাসে গেলে শ্যামলি অথবা কল্যান পুর থেকে এস-বি, নাবিল,হানিফ এবং শ্যামলীতে যেতে পারেন, ভালো বাস। এছাড়া কুড়িগ্রাম (০১৯২৪-৪৬৯৪৩৭, ০১৯১৪-৮৫৬৮২৬) পরিবহন এর বাসেও কুড়িগ্রাম যেতে পারবেন। দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে কুড়িগ্রাম জেলা বাস টার্মিনালে পৌঁছার পর আপনাকে যেতে হবে রাজার হাট। এরপর আবার রিক্সা বা অটো (ইজি বাইক) যোগে অচিন গাছ যাওয়া যাবে।

কোথায় থাকবেন

কুড়িগ্রাম থাকার জন্যে বেশ কিছু হোটেল আছে। নিম্নে তাদের নাম, ঠিকানা এবং ফোন নাম্বার দেয়া হলোঃ

  • হোটেল আকাশ
  • মেসার্স হোটেল ডিকে (আবাসিক)
    পরিচালনাকারী/মালিকের নামঃ আলহাজ্ব জহুরম্নল হক দুলাল,ঘোষপাড়া,কুড়িগ্রাম
    মোবাইলঃ ০১৭১২১২৩১৭১
  • মেসার্স হোটেল স্মৃতি (আবাসিক)
    পরিচালনাকারী/মালিকের নামঃ সেলিনা মাহাবুব, কেন্দ্রীয় বাসটর্মিনাল, কুড়িগ্রাম।
    মোবাইলঃ ০১৭১৯-০২৮৪১১
  • মেসার্স হোটেল মেহেদী (আবাসিক)
    পরিচালনাকারী/মালিকের নামঃ নিলুফার দ্দৌলা, ঘোষপাড়া,কুড়িগ্রাম।
    মোবাইলঃ ০১৭১১-৩৪৮৯১০
  • মেসার্স হোটেল আরজি (আবাসিক)
    পরিচালনাকারী/মালিকের নামঃ মোঃ খায়রম্নল আমিনুল ইসলাম, ঘোষপাড়া, কুড়িগ্রাম।
  • মেসার্স হোটেল নিবেদিকা (আবাসিক)
    পরিচালনাকারী/মালিকের নামঃ সুবোধ বণিক, আদর্শ পৌরবাজার, কুড়িগ্রাম
    মোবাইলঃ ০১৭১৭০৫৮২৯৫
  • মেসার্স হোটেল অর্ণব প্যালেস (আবাসিক)
    কফিল উদ্দিন আহমেদ (খোকন), কেন্দ্রীয় বাসটর্মিনাল, কুড়িগ্রাম।
    মোবাইলঃ ০১৭৪০৫৭১০০৬
  • মেসার্স হোটেল বসুন্ধরা (আবাসিক )
    মোবাইলঃ ০৫৮১-৬১৫০৭
  • মেসার্স মিতা রেস্ট হাউস (আবাসিক)
    পরিচালনাকারী/মালিকের নামঃ সৈয়দ সাজ্জাদ আলী, সবুজপাড়া, কুড়িগ্রাম।
Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ kurigramochinrajarhattree