কক্সবাজার মানেই শুধু নীল সমুদ্র নয়, এখানে লুকিয়ে আছে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের আরেক রূপ। উখিয়ার মাছকারিয়া বিল (Maskaria Beel) এখন লাল শাপলার রাজ্যে পরিণত হয়েছে। সবুজ পাতায় ঢাকা জলে লাল শাপলার সমারোহ যেন এক অপার্থিব সৌন্দর্যের সৃষ্টি করেছে। ভোরের লাল সূর্যের আলোয় ঝিলমিল জলে ভাসমান শাপলা, অতিথি পাখির কলকাকলি – সব মিলিয়ে যেন এক স্বপ্নের দেশ।
এক সময় প্রচুর মাছ পাওয়া যেত এই বিলে। মাছরাঙাসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির খাদ্য সংস্থানের জায়গা ছিল বলেই এর নামকরণ হয় মাছকারিয়ার বিল। গত ২০২২ সাল থেকে এই বিল মাছকারিয়া শাপলা বিল (Maskaria Shapla Bill) নামে পরিচিতি পেয়েছে। সূর্যোদয় থেকে বেলা এগারোটা পর্যন্ত ফুটে থাকে এই শাপলা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ঝিমিয়ে পড়ে ফুলগুলো।
শাপলা বিলের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা। নৌকায় ভেসে শাপলার সাথে ছবি তোলা, প্রকৃতির রূপ উপভোগ করা – সব মিলিয়ে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। তবে কিছু দর্শনার্থীর অসচেতনতায় শাপলা ফুল ছিঁড়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটছে, যা চিন্তার বিষয়।
শাপলা বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য বর্ষাকাল সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে বিলটি পূর্ণ থাকে এবং শাপলার সমারোহ দেখার জন্য এ সময়টাই সেরা। তবে অন্যান্য সময়েও বিলটিতে ভ্রমণ করা যায়, তবে শাপলার পরিমাণ কম থাকবে।
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মাছকারিয়া বিল কক্সবাজারের পর্যটনের এক নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। তবে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করে পর্যটন কার্যক্রম চালানো জরুরি। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যের কারণে এক সময় অবহেলিত এই বিলের সৌন্দর্য এখন স্থানীয়দের জন্য আয়ের উৎস হয়ে উঠেছে। নৌকা ভাড়া দিয়ে প্রায় পঞ্চাশটি পরিবারের জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে।
মাছকারিয়া বিলের সৌন্দর্য যেন অক্ষুণ্ণ থাকে, সে জন্য সকল দর্শনার্থীকে সচেতন হতে হবে। ফুল না ছিঁড়ে, পরিবেশ দূষণ না করে প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য উপভোগ করাই হোক আমাদের লক্ষ্য।
Leave a Comment