ঝিনাইদহ

ঢোল সমুদ্র দিঘী

ঢোলসমুদ্র দীঘিটি ঝিনাইদহের একটি আকর্ষণীয় বিনোদন স্থান। প্রায় ৫২ বিঘা জমির উপর অবস্থিত এ দীঘি ঝিনাইদহের সর্ববৃহৎ দীঘি। শহর থেকে ৪ কি.মি. পশ্চিমে অবস্থিত। দীঘিটি শতাব্দী পরিক্রমায় পানীয় জলের অফুরন্ত আধার হিসেবে কাজ করেছে এবং একজন পরাক্রমশালী রাজার রাজকীয় স্থাপনা সমূহের একটি স্মৃতি হিসেবে আজও টিকে আছে। ইতিহাসে আছে, ঝিনাইদহে রাজা মুকুট রায় নামে এক প্রতাপশালী জমিদার ছিলেন। রাজা মুকুট রায়ের অনেক সৈন্য সামন্ত ছিল। কথিত আছে তিনি ১৬ হল্কা হাতি, ২০ হল্কা অশ্ব ও ২,২০০ কোড়দার না নিয়ে বের হতেন না। রাস্তা নির্মাণ ও জলাশয় খনন করতে করতে তিনি অগ্রসর হতেন। ঝিনাইদহে তাঁর এমনি একটি অমর কীর্তি ঐতিহ্যবাহী পাগলা কানাই ইউনিয়নের ঢোল সমুদ্র দীঘি (Dhol Somudro Dighi)।

ঢোল সমুদ্র দীঘি খননের পেছনে একটি লোকশ্রুতি আছে, রাজা মুকুট রায়ের রাজত্বকালে একবার জলকষ্ট দেখা দেয়। অনন্যোপায় হয়ে রাজা দীঘি খননের সিদ্ধান্ত নেন। অগণিত লোকের দিন রাত পরিশ্রমে দীঘি গভীর হতে গভীরতর এবং চতুর্দিকে প্রশস্ত হতে লাগল। কিস্তু পুকুরে জল উঠল না। হতাশ রাজা একদিন স্বপ্ন দেখলেন যে, রাণী যদি পুকুরে নেমে পূজা দেন, তবে পুকুরে জল উঠবে। এ কথা জেনে প্রজাহিতৈষী রাণী পূজার নৈবেদ্য নিয়ে পুকুরে নামলেন। রাণী পুকুরের তলদেশে উপস্থিত হয়ে ইষ্টদেবতাকে নিবেদন করলেন পূজার অর্ঘ্য। জল ওঠা শুরু হলো। প্রার্থনা পূর্ণ হওয়ায় রাণী উপরে উঠতে শুরু করলেন। সহসা প্রবলবেগে জলরাশি উত্থিত হল। জল দেখে উদ্বেলিত পাড়ের সহস্র প্রজার উৎসব-আনন্দ আর বাদ্য-বাজনার মধ্যে অলক্ষ্যে রাণী অথৈ জলরাশির গভীরে তলিয়ে গেলেন।

কিভাবে যাবেন

ঢাকার গাবতলী থেকে ঝিনাইদহ যাবার জন্যে বেশ কিছু বাস আছে – রয়েল, JR, সোনার তরী, চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স,এসবি ( ননএসি ৪৫০, এসি ৬০০)।

আরাপপুর থেকে অটো বা ইজি বাইক নিয়ে সরাসরি ঢোল সমুদ্র দিঘী যাওয়া যায়। ভাড়া পড়বে ১৫-২০ টাকা।

কোথায় থাকবেন

হোটেল ড্রীম ইন্টারন্যাশ্নাল (ননএসি ৭০০, এসি ১৫০০), হোটেল কুটুম – ননএসি ৫০০,এসি ৮০০), এছাড়া কম দামের ও হোটেল আছে।

খাওয়া-দাওয়া

শহরে – আহার, ফুড সাফারী, সুইট, ঘরোয়া – যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই দেখিয়ে দেবে। এছাড়া ঘোষ এর মিষ্টি, পায়রা চত্ত্বরের পিউর ছানা, ছানার জিলাপী ইত্যাদি ট্রাই করবেন।

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ dhol somudrodighijhenaidah